শিলিগুড়ি ও বাগডোগরা: শিলিগুড়ি (Siliguri) এখন রাম–ময়। সোমবার অযোধ্যায় (Ayodhya) রাম মন্দির (Ram Mandir) উদ্বোধনের আগেই গোটা শহরের পাশাপাশি মহকুমার হিমও যেন ‘গেরুয়া’। রবিবার সকাল সকাল টোটো নিয়ে বেরিয়ে পড়া মনোজ বর্মার সঙ্গে যাত্রীর বাক্যালাপ ‘জয় শ্রীরাম’ দিয়েই শুরু হল। রাস্তাঘাটে একে অপরের সঙ্গে দেখা, কথাবার্তার সময়ও সেই একই স্লোগান। মোড়ে মোড়ে রামের ছবি দেখে ভক্তিভরে সবার নমস্কার, পাড়ায় পাড়ায় চায়ের দোকানগুলিতে রামলালাকে নিয়েই চর্চায় পরিষ্কার শিলিগুড়ি পুরোপুরিভাবে রামেই মজেছে।
দীপাবলিতে প্রদীপের চাহিদা বাড়ে। রাম মন্দির উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে শিলিগুড়িতে বর্তমানে প্রদীপের চাহিদা তুঙ্গে। এদিন বাজারে প্রদীপ কিনতে এসে মিনা ভগত বললেন, ‘১৪ বছর বনবাস শেষে রাম অযোধ্যায় পৌঁছোনোর দিন এলাকা প্রদীপে সেজে উঠেছিল। সোমবার রামলালার মূর্তি প্রতিষ্ঠা হবে। তাই শিলিগুড়িতেও বাড়ির মন্দিরে প্রদীপ জ্বালাতেই হবে।’ মিতালি রায় আগে কোনওদিন রামের পুজো করেননি। এদিন থানা মোড় থেকে তাঁকে ৬০ টাকায় ১০০ প্রদীপ কিনতে দেখা গেল। তিনি বলেন, ‘বন্ধুরা সবাই বাড়িতে প্রদীপ জ্বালাবে, আমাকেও জ্বালাতে হবে।’ এদিন দুপুরে আনন্দময়ী কালী মন্দিরের সামনে বসা মিনতি বর্মন, বাসন্তী রায়দের চর্চাতেও রামলালাই ছিলেন।
বাগডোগরার রামলালা সমারোহ সমিতির আয়োজনে এদিন একটি শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল। গেরুয়া পোশাকে সেজে হাতে পতাকা নিয়ে, মাথায় ফেট্টি বেঁধে আট থেকে আশির অনেকেই তাতে শামিল হয়েছিলেন। খড়িবাড়ি, নকশালবাড়ি, মাটিগাড়ার মতো এলাকাও এদিন রাম আবেগে ভাসে। অযোধ্যার সোমবারের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শিলিগুড়িতেও বেশ কয়েকটি কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের আয়োজনে শ্রীকৃষ্ণ প্রণামী মন্দিরে একটি মহাযজ্ঞ হবে। লায়ন্স ক্লাবের বিভিন্ন শাখার তরফে একটি শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। দোমাইলের শ্যাম মন্দির থেকে শুরু হয়ে সেটি খালপাড়ার হনুমান মন্দিরে গিয়ে শেষ হবে। ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের রামভক্ত সেবা সমিতির তরফে একটি শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।
বিজেপির বিধায়ক শংকর ঘোষ বললেন, ‘কল্পনা বাস্তব হলে মানুষের আবেগপ্রবণ হয়ে পড়াটা স্বাভাবিক।’ মেয়র গৌতম দেব ও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জীবেশ সরকার অবশ্য বিজেপিকে বিঁধেছেন। গৌতম বলেন, ‘রাজনীতির উদ্দেশ্যে এসব করা হচ্ছে।’ জীবেশের কথায়, ‘যা হচ্ছে, তা দেশের ঐতিহ্য ও ভবিষ্যৎকে বিপদের দিকে নিয়ে যাবে।’