গৌরহরি দাস, কোচবিহার: এবার ভোরের আলোর আদলে কোচবিহারে (Coochbehar) তোর্ষার (Torsa River) বুকে গড়ে উঠতে চলেছে পর্যটনকেন্দ্র (Tourist Hub)। পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ (Rabindra Nath Ghosh) এই উদ্যোগ নিয়েছেন। সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকও বিষয়টিতে সবুজ সংকেত দিয়েছেন। এখানে পর্যটনকেন্দ্রটি হলে কোচবিহারের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটবে বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল। পাশাপাশি পর্যটন মানচিত্রেও কোচবিহারের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে।
রাজবাড়ির পেছন দিকে তোর্ষা নদীর বিভিন্ন অংশ দখল হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় পুরসভা উদ্যোগ নিয়েছে রাজবাড়ির পেছন দিকে তোর্ষা নদীর ফাঁসির ঘাট এলাকা থেকে খাগরাবাড়ির দিকে পাঁচ কিলোমটার পর্যন্ত এলাকায় তোর্ষা নদীকে সংস্কার করে সেটিকে ড্যামের মতো করতে। তাতে একদিকে যেমন মাছ চাষ করা যাবে তেমনি নদীর দু’পাশে পর্যটকদের জন্য রিসর্ট করা যেতে পারে। পাশাপাশি সেখানে বোটিংয়ের ব্যবস্থা করার চিন্তাভাবনা রয়েছে। সবমিলিয়ে এর ফলে ভোরের আলোর মতো কোচবিহারেও একটি নতুন পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠবে।
রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই এই পরিকল্পনা করে আসছি। এবার কয়েকদিন আগে কোচবিহারে সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এসেছিলেন। তাঁকে জায়গা দেখিয়ে পরিকল্পনার বিষয়টি সবিস্তারে জানিয়েছি। সমস্ত বিষয়টি দেখে ও শুনে মন্ত্রী রাজি হয়েছেন। তিনি খুব শীঘ্রই তাঁর বিভাগীয় আধিকারিকদের এ বিষয়ে নির্দেশ দেবেন।’
তাঁর দাবি, মন্ত্রী চেষ্টা করবেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কোচবিহারের এই মরাতোর্ষা নদীটাকে সংস্কার করে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার। এতে দেশ-বিদেশ থেকে যে সমস্ত পর্যটক কোচবিহারে আসেন তাঁরা বেশ কিছুটা সময় সেখানে কাটানোর সুযোগ পাবেন।
কয়েক বছর আগে কোচবিহারে এসে কোচবিহারকে হেরিটেজ শহর হিসাবে ঘোষণা করার সুপারিশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর থেকে খড়্গপুর আইআইটি থেকে হেরিটেজ বিশেষজ্ঞরা বেশ কয়েকবার কোচবিহারে এসে কোচবিহারের সমস্ত ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য পরিদর্শন করে গিয়েছেন। পাশাপাশি কয়েকমাস আগে রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের তরফে কোচবিহারের ১৫৪টি স্থাপত্যকে হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি শহরে বিভিন্ন হেরিটেজ ভবন ও স্থাপত্যগুলি সংস্কারের কাজও জোরকদমে চলছে। খুব শীঘ্রই কোচবিহারকে হেরিটেজ ঘোষণা করা হবে বলে খবর।
বিভিন্ন মহলের মতে কোচবিহারকে হেরিটেজ ঘোষণা করা হলে রাজ্যের পাশাপাশি দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আনাগোনা কোচবিহারে অনেকটা বেড়ে যাবে। এই অবস্থায় শহর ও শহর সংলগ্ন এলাকায় তোর্ষা নদীর বুকে ভোরের আলোর মতো এ ধরনের পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠলে তা কোচবিহারের জন্য অবশ্যই ভালো হবে। শহরের বাসিন্দা দেবব্রত বণিক, অপু দে জানান, এটা খুবই ভালো উদ্যোগ। এটা হলে আমাদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে সেখানে সময় কাটাতে পারব।