প্রণব সূত্রধর, আলিপুরদুয়ার: অল্পবয়সিদের মধ্যে মাদকের প্রতি আসক্তি ক্রমশ বাড়ছে। আর সেই নেশার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে বিভিন্ন অসামাজিক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে তারা। কখনও তারা মাদক পাচার করার ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা নিচ্ছে। এদের মাদকের নেশা ছাড়াতে জেলায় একটি নেশামুক্তি কেন্দ্র (Rehabilitation Centre) তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) কামাখ্যাগুড়িতে সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত নেশামুক্তি কেন্দ্র তৈরির কথা রয়েছে। সরকারি অনুদানে তৈরি কেন্দ্র জেলায় এই প্রথম। তবে পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের তরফে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে ঠিক কবে থেকে এই কাজ শুরু হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এখনও অনুমোদন না মেলায় বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না কেউই। জেলা সমাজ কল্যাণ আধিকারিক তাপসকুমার মণ্ডল বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের তরফে নেশামুক্তি কেন্দ্র তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে এখনও অনুমোদন মেলেনি। অনুমোদন মিললে সুবিধা হবে।’
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, কুড়িজনের চিকিৎসা চলতে পারে, এমন নেশামুক্তি কেন্দ্রের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। স্থায়ী চিকিৎসকের পরামর্শ মিলবে। এছাড়া, বিভিন্ন স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের মাধ্যমে নেশামুক্তির বিকল্প প্রচেষ্টা করা হবে। তবে এখনও সেসব কিছুই চূড়ান্ত হয়নি।
বিভিন্ন সময় পুলিশের তরফে অভিভাবকদের সহযোগিতায় স্কুল পড়ুয়া সহ তরুণদের নেশামুক্তি কেন্দ্রে পাঠানো হয়। জেলায় বেশ কয়েকটি বেসরকারি নেশামুক্তি কেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু সেখানে খরচ মেটাতে হিমসিম খেতে হয় অভিভাবকদের। চিকিৎসা সহ থাকা-খাওয়ার খরচ মিলিয়ে বেশ মোটা অঙ্কের টাকা লাগে। সেজন্য অনেকেই তাঁদের মাদকাসক্ত ছেলেমেয়েকে সেখানে রেখে চিকিৎসা করাতে পারেন না। কয়েকজনকে অবশ্য পুলিশ সহযোিগতা করে। তবে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় নাবালিকাদের নিয়ে। অনেক সময় অভিযোগ উঠলেও নাবালিকাদের রাখার নির্দিষ্ট জায়গা পেতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় কেন্দ্রগুলিকে। এই পরিস্থিতিতে সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত নেশামুক্তি কেন্দ্র তৈরির প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির (সিডব্লিউসি) চেয়ারম্যান অসীম বসুর কথায়, ‘বর্তমানে বেশ কয়েকটি ঘটনায় মাদকাসক্তদের তালিকায় মেয়েদের নাম জড়িয়েছে। বিষয়টি সামনে আসার পর একটি সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত নেশামুক্তি কেন্দ্র তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে এই বিষয়ে অভিভাবক সহ সকলের সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে।’