দিনহাটা: ‘আমাদের কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত।’ বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি নেতৃত্বের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট দেখিয়ে এমনটাই দাবি করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ (Udayan Guha)। তিনি বলেন, ‘বিজেপি নেতৃত্ব ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। সেই পোস্টে লেখা রয়েছে, জন্মদিনের উপহার কেমন লাগল, এরপর ভেবেচিন্তে আসবেন সামনে। এতে স্বাভাবিকভাবেই স্পষ্ট যে, গোটা ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত।’ এদিন বনধ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা সাধারণ মানুষ চেয়েছিল। তাই একটা প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।’
গতকালের ঘটনার পর এদিন দিনহাটায় (Dinhata Clash) আসছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। সে প্রসঙ্গে উদয়ন বলেন, ‘এর আগেও যখন আমার ওপর আক্রমণ হয়েছিল, সেসময়ও রাজ্যপাল এসেছিলেন। কিন্তু তিনি আমার খোঁজ না নিয়ে বরং যারা অভিযুক্ত তাদের খোঁজ নিয়েছেন। এবারও তিনি হয়তো আসবেন, ঘুরবেন। তবে তিনি এসে যাতে প্রকৃত ঘটনার খোঁজ খবর নেন।’
মঙ্গলবার রাতে পাঁচমাথার মোড়ে তৃণমূল পার্টি অফিসের শ-দুয়েক মিটার দূরে হুলুস্থুলু বেধে যায়। নিশীথ প্রামাণিক ও উদয়ন গুহ তো বটেই, ধস্তাধস্তিতে পিছিয়ে ছিলেন না ওই দুই কেন্দ্র ও রাজ্যের মন্ত্রীর অনুগামীরাও। শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দুই মন্ত্রীর হাতাহাতিতে উত্তাপ বাড়তেই কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশ এলাকার দখল নিয়ে নেয়। ঝটপট বন্ধ হয়ে যায় আশপাশের দোকানের শাটার। গতকালের ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার ২৪ ঘণ্টার দিনহাটা বনধের (Dinhata Bandh) ডাক দিয়েছে তৃণমূল।
ঘটনার সূত্রপাত রাত ন’টা নাগাদ। তখন নিশীথের কনভয় নিগমনগর থেকে ফিরছিল। গতকালই আবার উদয়নের জন্মদিন ছিল। সেই সময়ই সাহেবগঞ্জ রোডে দিনহাটা পুরসভার চেয়ারম্যান গৌরীশংকর মাহেশ্বরীর বাড়ির সামনে উদয়নের জন্মদিন পালন করা হচ্ছিল। সেই উপলক্ষ্যে তখন সেখানে শতাধিক তৃণমূল কর্মী জড়ো হয়েছিলেন। দুই পক্ষ মুখোমুখি হয়ে পড়ার ফলেই বিতণ্ডার সূত্রপাত। এতে একে-অপরের উপর দায় চাপিয়ে দিয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি।
রাজনৈতিক মহলের মতে, এই ঘটনায় আদতে বিজেপির হাতেই একটা বড় ইস্যু চলে এল। প্রার্থী হিসেবে নিশীথের নামই আগে ঘোষণা করা হলেও প্রচারে এখনও অবধি এগিয়ে ছিল তৃণমূলই। কিন্তু এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এবার প্রচারে হইচই ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে বিজেপি। ফ্রন্টফুটে থাকা তৃণমূল এর ফলে আসন্ন নির্বাচনে সমস্যায় পড়তে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।