জ্যোতি সরকার, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়িতে কমপক্ষে ১০টি বিপজ্জনক অবস্থায় থাকা জীর্ণ বাড়ি ও দোকান ভেঙে না ফেলা হলে গার্ডেনরিচের মতো ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে এ শহরেও। শহরের কর্মব্যস্ত এলাকাগুলিতেই রয়েছে এই ভবনগুলি। তাই একবার এমন কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে প্রচুর মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। স্থানীয়রা বলছেন, পুর কর্তৃপক্ষ সবই জানে। কিন্তু বছরের পর বছর কেটে গেলেও কোনও পদক্ষেপ করেনি। স্বাভাবিকভাবেই পুরসভার উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
দিনবাজার, থানা মোড় সহ নিউ সার্কুলার রোড এলাকায় এভাবেই বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে দোকান ও বাড়ি। সম্প্রতি জলপাইগুড়ির কর্মব্যস্ত থানা মোড়ের এমনই এক ভবনে শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। তবে সময়মতো দমকলবাহিনী আসায় আগুন বেশি ছড়াতে পারেনি। থানা মোড়ে শহরের দুই ব্যবসায়ীর দোকান বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। বারবার পুরসভা তাঁদের নোটিশ পাঠালেও কর্ণপাত করেননি। উত্তরবঙ্গ সংবাদে এ সম্পর্কে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর জলপাইগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় তদন্তের জন্য পুরসভার দুই ইঞ্জিনিয়ার যশোপ্রকাশ দেবদাস ও লাবণী সরকারকে পাঠান। সূত্রের খবর, তদন্ত রিপোর্ট প্রায় ছয় মাস আগেই পুরসভায় জমা পড়েছে। সেখানে নির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে, দোকানঘরটি খুবই বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। তারপরেও পুর কর্তৃপক্ষ হাত গুটিয়ে বসে আছে।
নর্থবেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক পুরোজিৎ বক্সীগুপ্ত বলেন, ‘সকলের নিরাপত্তার স্বার্থেই বিপজ্জনক বাড়ি এবং ভবনগুলি ভেঙে ফেলা দরকার। আমরা চাই না গার্ডেনরিচের মতো ভয়াবহ ঘটনার পুনরাবৃত্তি জলপাইগুড়ি শহরে হোক।’
দিনবাজারে এরকম বিপজ্জনক সাতটি ভবন রয়েছে। এই ভবনগুলির নীচে দোকান রয়েছে। নিউ সার্কুলার রোডেও এমন বাড়ি রয়েছে। একটি পরিবার সেখানে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছে। এব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে নির্বাচনি আচরণবিধির জুজু দেখিয়ে দিয়েছেন সৈকত। বলেন, ‘বর্তমানে আদর্শ নির্বাচনি আচরণবিধি বলবৎ হয়েছে। এখন কোনও পলিসি নির্ধারণ করা যায় না। আদর্শ আচরণবিধি প্রত্যাহিত হলে দ্রুতগতিতে ব্যবস্থা নেব।’
জলপাইগুড়ি শহরের স্পোর্টস কমপ্লেক্স সংলগ্ন জলাজমিতে বহুতলের পরিকল্পনা নিয়ে উত্তরবঙ্গ সংবাদে খবর প্রকাশিত হওয়ায় আলোড়ন তৈরি হয়েছে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য রঞ্জিত মিত্র বলেন, ‘বহুতল নির্মাণের জন্য যে জায়গা বাছাই করা হয়েছে সেখানে আমরা মর্নিং ওয়াক করি। আমরা চাই না কোনও জলা জমিতে বহুতল নির্মিত হোক।’