উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ রবিবার রাতে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধে গাইঘাটার ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে ‘শারীরিক নিগ্রহের’ অভিযোগ তুললেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। মমতা বালার অভিযোগ, তালা ভেঙে প্রয়াত বড়মা বীণাপাণিদেবীর ঘরের ‘দখল’ নেওয়ার চেষ্টা করেছেন শান্তনু। তাঁকে বাধা দিতে গেলে তাঁকে ও তাঁর মেয়েকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয়।
তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতা বালার অভিযোগ, ঠাকুরবাড়িতে যে ঘরে বীণাপাণি দেবী থাকতেন, সেই ঘরেই রবিবার রাতে দলবল নিয়ে শান্তনু চড়াও হন শান্তনু ঠাকুর। শাবল, হাতুড়ি দিয়ে বীণাপাণিদেবীর ঘরের তালা ভাঙেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পরিবারের আরও কয়েক জন সদস্য। মমতাবালা বলেন, “বীণাপাণিদেবী যখন বেঁচে ছিলেন ওঁনার পাশের ঘরেই থাকতাম, এখনও সেই ঘরেই থাকি। বড়মা নারী সমাজে সর্বোচ্চ স্তরে ছিলেন। তাঁকে সকলে বড়মা বলে পুজো করি। মোদির পরিবারের সদস্য শান্তনু ঠাকুর জুতো পায়ে লাথি মেরে তালা ভেঙে বড়মার ঘরে ঢুকে আমাদের উপর অত্যাচার করেছে। আমি ও আমার মেয়ে ঘরের দরজার পাশে বসেছিলাম। আমাদের ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে বড়মার ঘরে জুতো পায়ে ঢুকেছে।’’
ঠাকুরবাড়ির ঘটনা নিয়ে বিজেপিকে নিশানা করে মমতাবালা, এটা স্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদি নানা জায়গায় নারীর সশক্তিকরণ নিয়ে অনেক কথা বলেন। তাঁর দলের লোক মহিলাদের উপর এ ভাবে অত্যাচার করছে! রাজ্যসভার সাংসদ হয়ে যদি আমাকে এই অত্যাচার সহ্য করতে হয়, তা হলে ভাবুন, ২০২৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় এলে দেশের সাধারণ মহিলাদের হাল কী হবে? আমি সমগ্র নারী সমাজের কাছে বিচার চাই। আমি মনে করি, বড়মার প্রতি যে কোটি কোটি মানুষের শ্রদ্ধা রয়েছে, সেই শ্রদ্ধাকে আঘাত করেছে শান্তনু ঠাকুর।’’
তবে তিনি এখনও পর্যন্ত শান্তনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেননি। বনগাঁর পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেছেন, ‘‘অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’
মমতাবালার ওপর হামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে শান্তনু ঠাকুর বলেন, ‘‘আমার ঠাকুরদার বাড়িতে আমার সমান অধিকার। সেখানে তালা ভেঙে ঢুকব না কী ভাবে ঢুকব, আমার ব্যাপার। একটা ঘরে উনি (মমতা ঠাকুর) থাকুন, অন্য ঘরটি আমরা বুঝে নিয়েছি। মমতা ঠাকুর পুরো বাড়িটাই জবরদখল করে রেখেছিলেন।’’
রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদ তথা মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘তৃণমূলের মদতে মমতাবালা ঠাকুর এই ধরনের অভিযোগ করছেন। বিজেপি ঠাকুরবাড়ির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ঢুকবে না। বিজেপি চায়, ঠাকুরবাড়ির মর্যাদা অক্ষুণ্ণ থাকুক।’’ মন্তব্য করতে চাননি দিলীপ ঘোষও। বলেছেন, ‘‘এটা ওঁদের পারিবারিক বিষয়। এ নিয়ে কিছু বলব না।’’