চ্যাংরাবান্ধা : মেধাতালিকায় তার স্থান হয়নি চ্যাংরাবান্ধা (Changrabandha) গ্রাম পঞ্চায়েতের চৌরঙ্গী এলাকার বাসিন্দা দীপজয় সরকারের। সেই প্রত্যাশাও ছিল না তার। কিন্তু দিনমজুর ঘরের ছেলে লড়াই করে দেখিয়ে দিয়েছে লক্ষ্য ঠিক থাকলে বহু প্রতিবন্ধকতাকেই টপকে যাওয়া সম্ভব। মাধ্যমিকের রেজাল্ট (Madhyamik 2024) বের হওয়ার পর থেকে দীপজয়দের বাড়িতে আজ হাজার ওয়াটের আলো। কারণ লড়াইয়ের পর যে ফল পাওয়া যায় তার স্বাদ বোধ হয় অনেকটাই আলাদা। চৌরঙ্গী উচ্চবিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে দীপজয়। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর হল ৫৯৯। বাংলায় ৯১, ইংরেজিতে ৭০, অঙ্কে ৯০, ভৌত বিজ্ঞানে ৮৭, জীবন বিজ্ঞানে ৮১, ইতিহাসে ৮৬, ভূগোলে ৯৪ ও ঐচ্ছিক বিষয়ে ৮৫।
এদিন চৌরঙ্গীর বাড়িতে বসে দীপজয় বলে, ‘টানা পড়তাম না কখনও। পড়ার ফাঁকে একটু বিরতি নিয়ে নিতাম। সকালে উঠে নয় বরং রাত জেগেই আমার ভালো পড়া হয় সবসময়। তবে পড়াশোনায় কখনও ফাঁকিবাজি করিনি। যতক্ষণ পড়তাম মন দিয়ে পড়তাম।’ দীপজয়ের কথায়, ‘অঙ্ক আমার প্রিয় বিষয় হলেও আর্থিক সমস্যার কারণে আমি বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে পারবো না। তাই কলা বিভাগে আমার স্কুলেই ভর্তি হবো।’ পড়াশোনার পাশাপাশি সত্যজিৎ রায়ের লেখা তার প্রিয়। বড় হয়ে শিক্ষক নয়তো প্রশাসনিক আধিকারিক হয়ে মানুষের জন্য কাজ করতে চায় দীপজয়। এদিকে ছেলের ফলাফলের আনন্দে আজ কাজেই যাননি দিপজয়ের গর্বিত বাবা নেপাল সরকার। পাশে স্ত্রী মালতী সরকারকে নিয়ে তিনি জানালেন, অনেক কষ্ট করে ছেলেকে পড়াশোনা করাচ্ছেন। একদিন হাজিরা না খাটলে লোকসান হলেও এমন দিন রোজ রোজ আসবে না। ছেলে বড় হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে মানুষের মতো মানুষ হোক এটাই তাঁর একান্ত চাওয়া। এদিকে এদিন বিকেলে চৌরঙ্গী উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা ও পরিচালন সমিতির সদস্যরা অভিনন্দন জানাতে দিপজয়ের বাড়ি পৌঁছায়। চৌরঙ্গী উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল হাকিম বলেন, ‘ছোট থেকেই ক্লাসে প্রথম হয় শান্ত স্বভাবের দীপজয়। ও আমাদের গর্ব। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পরবর্তীতে ওর সংবর্ধনার আয়োজন করা হবে।’