কোচবিহার ও তুফানগঞ্জ: স্বয়ং নরেন্দ্র মোদি প্রচারে এসে কোচবিহার রাজ পরিবারকে শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার রাজ পরিবারের অবদানের কথা বলেছেন। সম্প্রতি কোচবিহারে লিটল ম্যাগাজিনের মেলায় এসে ভাষণে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু মহারাজাদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছোট-বড় নেতারা কথায় কথায় কোচবিহারের মহারাজাদের ভূয়সী প্রশংসায় মেতে ওঠেন। তবু বৃহস্পতিবার কোচবিহারের মহারাজা রাজরাজেন্দ্রনারায়ণের জন্মবার্ষিকী ও জগদ্দীপেন্দ্রনারায়ণের মৃত্যুবার্ষিকী থাকলেও তা পালন করতে কোনও রাজনৈতিক দলের নেতাদের দেখা মিলল না।
কোচবিহার রয়্যাল ফ্যামিলি সাকসেসর্স ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের গুটিকয়েক সদস্য এদিন কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী কেশব আশ্রম তথা রানিবাগানে মহারাজাদের সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। তুফানগঞ্জে দ্য কোচবিহার রয়্যাল ফ্যামিলি সাকসেসর্স অফ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের তরফে মহারাজা রাজরাজেন্দ্রনারায়ণের ১৪২তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়। এদিন রাজরাজেন্দ্রনারায়ণ মহকুমা গ্রন্থাগারের সামনে তাঁর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন ট্রাস্টের সম্পাদক কুমার বিরাজেন্দ্রনারায়ণ। তিনি বলেন, ‘সামনেই মহারাজের ১৫০তম জন্মবার্ষিকী। সেই উপলক্ষ্যে গ্রন্থাগারের পাশে একটি মূর্তি স্থাপন করা হোক।’
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা কি তাহলে কোচবিহারের দুই মহারাজার অবদান ভুলে গেলেন? নাকি নির্বাচনি ভাষণে শুধু রাজবংশী ভোটের লক্ষ্যেই মহারাজাদের জন্য প্রশংসা করেন তাঁরা?
কোচবিহার রয়্যাল ফ্যামিলি সাকসেসর্স ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের মুখপাত্র কুমার মৃদুলনারায়ণ বলেন, ‘কেশব আশ্রমে কোচবিহারের দুই মহারাজার জন্ম ও মৃত্যুদিন আমরা পালন করেছি। অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক দলের নেতারা থাকলে আরও ভালো হত।’
১৪৩ বছর আগে এই দিনেই জন্ম হয়েছিল কোচবিহারের মহারাজা রাজরাজেন্দ্রনারায়ণের। আবার ৫৪ বছর আগে এই একই দিনে কোচবিহারের মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্রনারায়ণের মৃত্যু হয়। সেই দিক দিয়ে কোচবিহারবাসীর কাছে দিনটি আনন্দ ও দুঃখের। প্রতিবছরই কোচবিহারে দিনটি পালন করা হয়। এর আগে এই দিনটিতে দুই মহারাজাকে শ্রদ্ধা জানাতে বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে। এদিন কেশব আশ্রমে কোচবিহার রয়্যাল ফ্যামিলি সাকসেসর্স ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সভাপতি কুমার জিতেন্দ্রনারায়ণ, সংগঠনের মুখপাত্র কুমার মৃদুলনারায়ণ, দেবত্র ট্রাস্টের দুই-তিনজন প্রতিনিধি ও অন্যান্য দুই-একজন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। নেতাদের অনুপস্থিতি নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই আমজনতার মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে।
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু অবশ্য বলেন, ‘আমরা এখানে করিনি। কিন্তু আমাদের মণ্ডল থেকে দুই-তিন জায়গায় দিনটি পালন করা হয়েছে।’ তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, ‘এনিয়ে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলির সতর্ক থাকা উচিত ছিল।’