সানি সরকার, শিলিগুড়ি: জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকায় যেতে হচ্ছে ঘুরপথে। তার ওপর রয়েছে ভোটের গেরো। তা সত্ত্বেও তুষারপাতে (Sikkim snowfall) পর্যটনে লক্ষ্মীলাভ দেখছে সিকিম (Sikkim)। ছাঙ্গু সহ একাধিক জায়গায় বিরামহীন তুষারপাত হওয়ায় এবং তা নিয়ে ভিনরাজ্যের পর্যটকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়ায় সমতলের পর্যটন ব্যবসায়ীরাও খুশি। তুষার সমস্ত বাধা দূর করতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। যদিও গত বছরের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবছর কড়া সিকিম। যেমন এখন ২০ মাইলের পর পর্যটকদের প্রবেশে শুক্রবার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নজরদারি শুরু হয়েছে পর্যটকদের চলাচলের ওপর। উল্লেখ্য, গত বছরের ৪ এপ্রিল ১৫ মাইলে তুষার চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছিল সাত পর্যটকের।
লোকসভা নির্বাচনের গেরোয় পর্যটনে টান পড়েছে পাহাড়ে। এখনও পর্যন্ত বুকিং বাতিল না হলেও অন্য বছরের তুলনায় এবার বুকিংয়ের হার কম। তার মধ্যে বৃষ্টি হলেই রবিঝোরা এবং লিকুভিরে ধস নামছে। পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়ছে পাথর। যার জন্য প্রায়সময়ই বন্ধ থাকছে সিকিমের লাইফলাইন। যেমন নতুন দফায় শনিবার সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে সিকিমের লাইফলাইনের রবিঝোরা থেকে ২৯ মাইল, যা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে পাহাড়-সমতলের পর্যটন মহলে। কিন্তু নতুন করে পূর্ব সিকিমের ছাঙ্গু সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ভারী তুষারপাত শুরু হওয়ায় এবং তা নিয়ে পর্যটকদের আগ্রহ বৃদ্ধি হওয়ায় আশার আলো দেখছে সিকিম এবং শিলিগুড়ির পর্যটন মহল। তুষারের টানে ঘুরপথে হলেও অর্কিড-রাজ্যে পর্যটকরা বেড়াতে আসবেন বলে তাঁরা মনে করছেন। পাশাপাশি, ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবিও উঠছে।
সিকিমের হোটেল ব্যবসায়ী শুভঙ্কর সাহা বলছেন, ‘এই সময় সিকিমে তুষারপাত নতুন কোনও ঘটনা নয়। কিন্তু অনেকেই কবে থেকে শুরু হয়েছে, কতদিন থাকতে পারে, এখন ভিড় কেমন, এমন নানা বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন।’ কিছু বুকিং হচ্ছে বলে জানান পরিবহণ ব্যবসায়ী লাকপা শেরপা। লাকপার কথায়, ‘প্রতিবছরই এসময় পর্যটকদের (Tourists) ভিড় থাকে। কিন্তু ভোটের জন্য বুকিং কম হয়েছে। আরও একটি কারণ রাস্তা খারাপ থাকা। কিন্তু দু’দিন ধরে নতুন বুকিং পাচ্ছি ট্যুর অপারেটরদের কাছ থেকে।’
জাতীয় সড়ক বারবার বন্ধ না হলে আরও পর্যটক পাওয়া যেত বলে মনে করেন অনেকে। রাস্তাটির স্থায়ী মেরামতির দাবিতে কয়েকদিন আগেই কালিম্পং জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছিল হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলছেন, ‘যে কোনও জাতীয় সড়ক গুরুত্বপূর্ণ। তাই জাতীয় সড়ক খোলা রাখার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের কিছু নির্দিষ্ট নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক যেভাবে প্রায় সময়ই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, তা দুর্ভাগ্যজনক। জাতীয় সড়কটি বন্ধ না থাকলে আরও বেশি পর্যটক পাওয়া যেত।’