রায়গঞ্জঃ রবীন্দ্রজয়ন্তীতে এবারও বন্ধ থাকল রবীন্দ্র ভবন। ফলে রবীন্দ্র ভবনে রবীন্দ্র মূর্তিতে মাল্যদান ও শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারলেন না রবীন্দ্রপ্রেমীরা। রবীন্দ্র ভবনের বাইরে রায়গঞ্জ রেল স্টেশনের ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠান সারতে হল রায়গঞ্জ কালচারাল ফোরাম ও রায়গঞ্জ পুরসভাকে। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে রবীন্দ্র ভবন সংস্কারের কাজ হলেও এখনও ফিট সার্টিফিকেট না পাওয়ায় প্রশাসনের তরফে রবীন্দ্র ভবন ব্যবহারে ছাড়পত্র মিলছে না।
রায়গঞ্জ শহর ও আশেপাশের এলাকার রবীন্দ্রপ্রেমীদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফলে ২০১৬ সালে রবীন্দ্র ভবন নির্মিত হয়। কিন্ত ভবন নির্মাণের কয়েক বছরের মধ্যেই বাইরের ও ভেতরের বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরে। বাতানুকূল যন্ত্র, সাউন্ড সিস্টেম সহ অন্যান্য মূল্যবান যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে যায়। পরবর্তীতে প্রশাসনের তরফে ২০২২ সালে সেই সব বিকল হয়ে যাওয়া সামগ্রী সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বরাদ্দ হয় ৩০ লক্ষ টাকা। কিন্তু দেড় বছর হয়ে গেলেও সংস্কারের কাজ শেষ না হওয়ায় সমস্ত অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। কোনও প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে না। ২০২৩ সালের পর এবারেও রবীন্দ্র জয়ন্তী অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র ভবনের দরজা খুলল না। হতাশ হয়েছেন রবীন্দ্রপ্রেমীরা। সঙ্গীতশিল্পী কমল নাগের কথায়, ‘আমাদের দীর্ঘ আন্দোলনের ফলে রবীন্দ্র ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হলেও সেখানে রবীন্দ্র জয়ন্তী অনুষ্ঠান করা যাচ্ছে না। কবিগুরুকে আমরা সেখানে শ্রদ্ধা জানাতে পারছি না। এর চেয়ে দু:খ আর কি থাকতে পারে।’
বঙ্গরত্ন প্রাক্তন প্রধানশিক্ষক অমিত সরকার বলেন, ‘আমাদের জেলার রবীন্দ্র ভবন অনেক আন্দোলনের ফল। তাই কবিগুরুর জন্মদিনে সেখানে যদি কবিগুরুকে শ্রদ্ধা জানানো না যায় তাহলে ভীষণ কষ্টের। আমরা চাই দ্রুত রবীন্দ্র ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করে ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হোক।’
এর আগে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছিল পূর্ত দপ্তর ফিট সার্টিফিকেট দিলে মার্চেই চালু করা হবে রায়গঞ্জ রবীন্দ্র ভবন। দীর্ঘদিন ধরেই রায়গঞ্জ রবীন্দ্র ভবনের ভিতর এবং বাইরের অংশ বেহাল অবস্থায় ছিল। ২০২২ সালে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর ৩০ লক্ষ টাকা অনুমোদন করে ভবন সংস্কারের জন্য। সেই টাকা দিয়ে ভিতরের অংশের সংস্কার কাজ হলেও বাইরের অংশের হাল এখনও বেহাল। তাই কবে আবার রবীন্দ্র ভবন পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসবে কেউ জানেন না। রায়গঞ্জের মহকুমা শাসক কিংশুক মাইতি জানান, ‘ভেতরের সংস্কারের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু জেনারেটরটি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না হওয়ায় বসে গিয়েছে। বাইরে থেকে ইঞ্জিনিয়ার নিয়ে এসে মেরামত করতে হবে। কিন্তু নির্বাচনের জন্য সবটাই বন্ধ আছে। জেনারেটর মেরামত না হলে ভাড়া দেওয়া যাবে না। ভবনের বাইরের দিকটা সংস্কারের জন্য টাকা না আসলে কাজ করা সম্ভব নয়। সবটা ঠিকঠাক না হওয়ায় আর কোনও অপশন ছিল না।’