নীহাররঞ্জন ঘোষ, মাদারিহাট: চিকিৎসকরা বলছেন, এখনও বিপদ পুরোপুরি কাটেনি। তবু তার মধ্যেই খানিকটা হলেও চাঙ্গা দেখিয়েছে হলংয়ের নতুন অতিথি সেই হস্তীশাবককে (Elephant)। মা হারা সেই বুনোকে রবিবার নিয়ে আসা হয়েছিল হলং সেন্ট্রাল পিলখানায়। অনেক চেষ্টা করেও কিন্তু তাকে সোমবার দুধ খাওয়ানো যায়নি। মাকে খুঁজছে সে। মাঝেমধ্যে চিৎকার করছে আর এদিক-ওদিক তাকাচ্ছে।
সোমবার তরমুজ খাওয়ানো হয়েছে তাকে। সেইসঙ্গে খেয়েছে খিচুড়ি ও বিচিকলা। আর নদীতে নিয়ে গিয়ে স্নান করানো হয়েছে। দু’-একটি ঘাস মুখে তুলেছে। রবিবার হলং (Hollong) সেন্ট্রাল পিলখানায় নিয়ে আসার পর থেকে সে একটি মিনিটের জন্য মাটিতে শরীর রাখেনি। একফোটা ঘুমায়নি।
জলদাপাড়ার বনাধিকারিক পারভিন কাশোয়ান জানালেন, ‘আমরা শাবকটিকে সুস্থ করে তোলার চ্যালেঞ্জ নিয়েছি। তবে চিকিৎসার পাশাপাশি সুস্থ হয়ে ওঠার বিষয়টি এখন ওর ভাগ্যের উপরও অনেকটাই নির্ভর করছে।’ বনকর্মীরা ওর পরিচর্যায় কোনও খামতি রাখছেন না।
তরমুজ খেতে দেওয়ার কারণ রয়েছে। বনাধিকারিক জানিয়েছেন, তরমুজের ভেতর জলীয় ভাব রয়েছে। তাতে সেই খুদের শরীরের জলের চাহিদা মিটছে। আর কলা গাছের ভেতর যে নরম অংশ রয়েছে সেটা কুচিকুচি করে কেটে খাওয়ানোর চেষ্টা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
মাকে খুঁজে না পেয়ে আপাতত সেই হস্তীশাবকের মেজাজ সপ্তমে। মায়ের জন্য মাদি শাবকটি খুব চিৎকার করছে। তাকে দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মাহুত নির্মল কুজুরকে। মাকে দেখতে না পেয়ে রেগে গিয়ে নির্মলকে মাথা দিয়ে বারবার ঢুঁ মারছে।
সোমবার কাশোয়ান শাবকটিকে দেখতে আসেন। তার মাথায় ও শুঁড়ে হাত বুলিয়ে দেন। শাবকটিও তার ছোট্ট শুঁড় নেড়ে নেড়ে বনাধিকারিককে কিছু বলার চেষ্টা করছিল। হয়তো বলছিল, আমাকে আমার মায়ের কাছে নিয়ে চলো। বনাধিকারিক জানান, ‘দুই-তিনদিন না গেলে কিছুই বলা যাচ্ছে না। তার শরীরে এখনও জলের অভাব রয়েছে। সেইজন্য আমরা জলযুক্ত খাবার বেশি দেওয়ার চেষ্টা করছি। আর অন্য হাতিদের থেকে একদম আলাদা রাখা হয়েছে। অন্য মা হাতির কাছে এই মুহূর্তে ওকে আনার প্রশ্নই নেই।’