দীপঙ্কর মিত্র, রায়গঞ্জ: ভোটের আগেই ইস্তফা দিয়েছেন বিধায়ক পদ থেকে। লোকসভায় হেরেছেন পদ্ম প্রার্থীর কাছে। কর্মী-সমর্থকদের কাছে এখন তিনি একপ্রকার ব্রাত্য। এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছে, সংসদীয় রাজনীতিতে পুনর্জন্ম দিতে রায়গঞ্জ (Raiganj) বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে (Raiganj Assembly Bypoll) তাঁকে ফের প্রার্থী করতে পারে তৃণমূল। সেই ইঙ্গিত পেতেই ভোলবদল কৃষ্ণের (Krishna Kalyani)।
লোকসভায় হারের পর কৃষ্ণ কল্যাণী দলের একাংশের প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন। হারের জন্য দায়ী করেন দলের গোষ্ঠী কোন্দলকে। কিন্তু সেই কৃষ্ণই রবিবার সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, ‘লোকসভা নির্বাচনে ৪ লক্ষ ৯২ হাজার ভোটার আমাকে ভোট দিয়েছেন। তাঁদের আমি ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা ও নতমস্তকে প্রণাম জানাচ্ছি। যাঁরা আমাকে সমর্থন করেননি, তাঁদের প্রতিও আমার প্রণাম রইল। ভোটের সময় দলের যে কর্মী-সমর্থকরা আমার জন্য দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, তাঁদের অনেক কৃতজ্ঞতা, প্রণাম জানাচ্ছি। অভিনন্দন জানাচ্ছি রায়গঞ্জের নবনির্বাচিত সাংসদকে।’
কৃষ্ণ আরও লেখেন, ‘আমি তিন বছর রায়গঞ্জের বিধায়ক ছিলাম। সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি নিজের বিধানসভা এলাকার সার্বিক উন্নয়ন করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের একাধিক প্রকল্পের সুবিধে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে। আমি নিজের মনের কাছে স্পষ্ট, যে উদ্দেশ্য নিয়ে জনপ্রতিনিধি হয়েছিলাম সেই উদ্দেশ্য আমার সফল। আমি আমার ১০০ শতাংশ দিয়েছি। সততার সঙ্গে কাজ করেছি। তারপরও যদি আমার পরিষেবায় কোনও ভুল-ত্রুটি হয়ে থাকে, তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হতে না পারলেও রায়গঞ্জবাসীর জন্য আমি নিরন্তর কাজ করে যাব।’
তৃণমূলের পরাজিত প্রার্থীর হঠাৎ এমন পোস্ট কেন? তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। দলের অনেকেই মনে করছেন, উপনির্বাচনে টিকিট পেতেই কৃষ্ণের এই পালটি। আগামী ১০ জুলাই রায়গঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। নির্বাচনে টিকিট পেতে সামাজিক মাধ্যমে এমন লিখে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দল ও মানবদরদী হওয়ার বার্তা দিয়েছেন। রায়গঞ্জ পুরসভার কোঅর্ডিনেটররা অবশ্য বলতে শুরু করেছেন, ‘আমাদের সমর্থন ছাড়া জেতা সম্ভব নয়। দলের স্বার্থে একসঙ্গে লড়াই চাই আমরা।’ কৃষ্ণ অবশ্য বলছেন, ‘দল যা নির্দেশ দেবে, সেটাই মেনে চলব। প্রার্থী কে হবেন, সেটা নেত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন।’