Friday, May 17, 2024
Homeরাজ্যউত্তরবঙ্গসবজির দোকান সামলে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন বালুরঘাটের বাপির

সবজির দোকান সামলে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন বালুরঘাটের বাপির

পঙ্কজ মহন্ত, বালুরঘাট: দু’বার প্রাথমিক টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। দিয়েছেন ইন্টারভিউও। কিন্তু শিক্ষকের চাকরি আজও অধরা। সংসারের হাল ধরতে ভ্যান চালিয়ে সবজি নিয়ে আসেন হাটে। শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই সবজির দোকান সামলাচ্ছেন বালুরঘাট ব্লকের কামারপাড়ার ডুমইর গ্রামের বাসিন্দা বাপি দাস।

২০১৭ সালে প্রাথমিক টেটে ৯৫ নম্বর পেয়ে পাশ করেন বাপি। তারপর ২০২২ সালের পরীক্ষায় তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ১০৫। আজ থেকে এক দশক আগে শিক্ষক প্রশিক্ষণও নিয়েছেন তিনি। কিন্তু সবটাই উলুবনে মুক্তো ছড়ানোর মতো মনে হচ্ছে তাঁর। আজ থেকে ছয় বছর আগে পাশ করা টেট পরীক্ষার ইন্টারভিউ চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও নিয়োগের নামগন্ধ নেই। পেট তো চালাতে হবে। তাই কামারপাড়া বাজার ও হাটে গেলেই সবজির পসরা সাজিয়ে দেখা মেলে বাপির। সূর্য ওঠার আগেই ঘুম থেকে উঠে নিজেই ভ্যান চালিয়ে সবজি নিয়ে আসেন হাটে। তারপর সারাদিন চলে বেচাকেনা।

২০১১ সালে বাদামাইল এলপি হাইস্কুল থেকে ৫৮৯ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক পাশ করেন। উচ্চমাধ্যমিকে ৮১ শতাংশ নম্বর পান। তারপরেই প্রাথমিক শিক্ষকের প্রশিক্ষণ নিতে ভর্তি হন কুরমাইলের সরকারি ডিএড কলেজে। পরে বাংলায় সাম্মানিক স্নাতকে ৬৪ শতাংশ ও স্নাতকোত্তরে ৮৫ শতাংশ নম্বর পান তিনি। বাবা বিপুলচন্দ্র দাস একজন কৃষক। মা কল্পনা দাস গৃহবধূ। তাঁর দিদি দীপা দাসের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এখন সংসারের হাল ধরতে হয় বাপিকে। যদিও সবজি বিক্রির পাশাপাশি তিনি গ্রামের পড়ুয়াদের টিউশন পড়ান। পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের টিউশন পড়ান তিনি। বাংলা, শিক্ষা বিজ্ঞান, দর্শনশাস্ত্রের মতো বিষয়ও পড়ান তিনি।

বাপি দাসের কথায়, ‘সবজি বিক্রি করে কোনও শিক্ষকের কাছে পড়তে যেতে পারতাম না। দোকানে বসেই মোবাইলে অনলাইনে পড়াশোনা করতাম। বাড়ি ফিরে রাতে পড়তাম। অন্যের দুর্নীতির খেসারত আমাদের দিতে হচ্ছে। বিচার ব্যবস্থায় তোড়জোড় দেখে সুদিন ফিরবে ভেবেছিলাম। সেখানেও আশার আলো ক্ষীণ হয়ে আসছে। ছয় বছর আগে টেট পরীক্ষায় পাশ করেছি। এই বছর তাঁর ইন্টারভিউ দিলাম। গত বছর পরীক্ষায় পাশ করার পর কোনও খবর নেই। এইভাবে আমাদের মূল্যবান সময় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’

বাপির বাবা বিপুলবাবু বলেন, ‘ছেলের মতো প্রচুর শিক্ষিত বেকার হতাশ হয়ে পড়ছে। অনেকেই ভুল পথ বেছে নিচ্ছে। কিন্তু আমার ছেলে হার মানার মতো নয়। সে লড়াই করেই যাচ্ছে। এবছর দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে ৪০০ জন প্রাথমিকে ইন্টারভিউ দিয়েছে। তার মধ্যে বাপিও ছিল। এখন কবে নিয়োগপত্র তাঁর হাতে আসে, সে অপেক্ষায় পুরো পরিবার।’

Sushmita Ghosh
Sushmita Ghoshhttps://uttarbangasambad.com/
Sushmita Ghosh is working as Sub Editor Since 2018. Presently she is attached with Uttarbanga Sambad Digital. She is involved in Copy Editing, Uploading in website and various social media platforms.
RELATED ARTICLES
- Advertisment -
- Advertisment -spot_img

LATEST POSTS

0
আছড়ে পড়ল ৬০টি রকেট! ইজ়রায়েলের বিমানঘাঁটিতে হামলা ইরানের সমর্থনপুষ্ট হিজ়বুল্লা বাহিনীরইজ়রায়েলের সেনাঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালাল ইরানের সমর্থনপুষ্ট সশস্ত্র সংগঠন হিজ়বুল্লা। লেবাননে সক্রিয় শিয়া...

Aishwarya Rai Bachchan | ভাঙা হাতেই কানের রেড কার্পেটে দ্যুতি ছড়ালেন ঐশ্বর্য

0
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: ৭৭তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের দ্বিতীয় দিনে রেড কার্পেটে নজর কাড়লেন বলিউড ডিভা ঐশ্বর্য রাই বচ্চন(Aishwarya Rai Bachchan)। ফাল্গুনি শেন পিককের...
weather update in west bengal

Weather Report | তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে অস্বস্তি, সোমেই হাওয়া বদল বঙ্গে

0
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: ফের তীব্র গরমে পুড়ছে রাজ্যবাসী। শনি ও রবিবার উত্তর ও দক্ষিণ দুই বঙ্গের ছয় জেলায় তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি। উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি...

Sex Worker | ঘরের বৌকে যৌনকর্মী হতে চাপ! কাঠগড়ায় স্বামী-শাশুড়ি

0
শিলিগুড়ি: সন্তান জন্মের পর থেকেই বাড়ির বৌকে যৌন ব্যবসায় নামানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন খোদ স্বামী ও শাশুড়ি। আর এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে...

Siliguri | গৃহবধূকে দুই মেয়ে সহ বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ শাশুড়ির বিরুদ্ধে

0
শিলিগুড়ি: স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই গৃহবধূকে অত্যাচারের অভিযোগ শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে। দুই কন্যা সন্তান সহ তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল...

Most Popular