Thursday, May 2, 2024
Homeরাজ্যউত্তরবঙ্গসবজির দোকান সামলে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন বালুরঘাটের বাপির

সবজির দোকান সামলে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন বালুরঘাটের বাপির

পঙ্কজ মহন্ত, বালুরঘাট: দু’বার প্রাথমিক টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। দিয়েছেন ইন্টারভিউও। কিন্তু শিক্ষকের চাকরি আজও অধরা। সংসারের হাল ধরতে ভ্যান চালিয়ে সবজি নিয়ে আসেন হাটে। শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই সবজির দোকান সামলাচ্ছেন বালুরঘাট ব্লকের কামারপাড়ার ডুমইর গ্রামের বাসিন্দা বাপি দাস।

২০১৭ সালে প্রাথমিক টেটে ৯৫ নম্বর পেয়ে পাশ করেন বাপি। তারপর ২০২২ সালের পরীক্ষায় তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ১০৫। আজ থেকে এক দশক আগে শিক্ষক প্রশিক্ষণও নিয়েছেন তিনি। কিন্তু সবটাই উলুবনে মুক্তো ছড়ানোর মতো মনে হচ্ছে তাঁর। আজ থেকে ছয় বছর আগে পাশ করা টেট পরীক্ষার ইন্টারভিউ চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও নিয়োগের নামগন্ধ নেই। পেট তো চালাতে হবে। তাই কামারপাড়া বাজার ও হাটে গেলেই সবজির পসরা সাজিয়ে দেখা মেলে বাপির। সূর্য ওঠার আগেই ঘুম থেকে উঠে নিজেই ভ্যান চালিয়ে সবজি নিয়ে আসেন হাটে। তারপর সারাদিন চলে বেচাকেনা।

২০১১ সালে বাদামাইল এলপি হাইস্কুল থেকে ৫৮৯ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক পাশ করেন। উচ্চমাধ্যমিকে ৮১ শতাংশ নম্বর পান। তারপরেই প্রাথমিক শিক্ষকের প্রশিক্ষণ নিতে ভর্তি হন কুরমাইলের সরকারি ডিএড কলেজে। পরে বাংলায় সাম্মানিক স্নাতকে ৬৪ শতাংশ ও স্নাতকোত্তরে ৮৫ শতাংশ নম্বর পান তিনি। বাবা বিপুলচন্দ্র দাস একজন কৃষক। মা কল্পনা দাস গৃহবধূ। তাঁর দিদি দীপা দাসের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এখন সংসারের হাল ধরতে হয় বাপিকে। যদিও সবজি বিক্রির পাশাপাশি তিনি গ্রামের পড়ুয়াদের টিউশন পড়ান। পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের টিউশন পড়ান তিনি। বাংলা, শিক্ষা বিজ্ঞান, দর্শনশাস্ত্রের মতো বিষয়ও পড়ান তিনি।

বাপি দাসের কথায়, ‘সবজি বিক্রি করে কোনও শিক্ষকের কাছে পড়তে যেতে পারতাম না। দোকানে বসেই মোবাইলে অনলাইনে পড়াশোনা করতাম। বাড়ি ফিরে রাতে পড়তাম। অন্যের দুর্নীতির খেসারত আমাদের দিতে হচ্ছে। বিচার ব্যবস্থায় তোড়জোড় দেখে সুদিন ফিরবে ভেবেছিলাম। সেখানেও আশার আলো ক্ষীণ হয়ে আসছে। ছয় বছর আগে টেট পরীক্ষায় পাশ করেছি। এই বছর তাঁর ইন্টারভিউ দিলাম। গত বছর পরীক্ষায় পাশ করার পর কোনও খবর নেই। এইভাবে আমাদের মূল্যবান সময় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’

বাপির বাবা বিপুলবাবু বলেন, ‘ছেলের মতো প্রচুর শিক্ষিত বেকার হতাশ হয়ে পড়ছে। অনেকেই ভুল পথ বেছে নিচ্ছে। কিন্তু আমার ছেলে হার মানার মতো নয়। সে লড়াই করেই যাচ্ছে। এবছর দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে ৪০০ জন প্রাথমিকে ইন্টারভিউ দিয়েছে। তার মধ্যে বাপিও ছিল। এখন কবে নিয়োগপত্র তাঁর হাতে আসে, সে অপেক্ষায় পুরো পরিবার।’

Sushmita Ghosh
Sushmita Ghoshhttps://uttarbangasambad.com/
Sushmita Ghosh is working as Sub Editor Since 2018. Presently she is attached with Uttarbanga Sambad Digital. She is involved in Copy Editing, Uploading in website and various social media platforms.
RELATED ARTICLES
- Advertisment -
- Advertisment -spot_img

LATEST POSTS

Loksabha Election 2024 | মোদিকে নকল করেই জনপ্রিয়! নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রার্থী এই কমেডিয়ান

0
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (PM Narendra Modi) নকল করতে পারদর্শী তিনি। তাঁকে নকল করেই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। এবার লোকসভা নির্বাচনে (Loksabha...
mathabhanga high school asif kamal seventh in madhyamik result

Madhyamik Result | মাধ্যমিকে রাজ্যে সপ্তম মাথাভাঙ্গার আসিফ, খুশির হাওয়া শহরে

0
মাথাভাঙ্গা: এবারের মাধ্যমিকের ফলাফলে(Madhyamik Result) আবার চমক দিল মাথাভাঙ্গা হাইস্কুল। সম্ভাব্য মেধা তালিকায় রাজ্যে সপ্তম স্থান অধিকার করল মাথাভাঙ্গা(Mathabhanga) হাইস্কুলের ছাত্র আসিফ কামাল। মাধ্যমিকে...

চোখের সামনে ধ্বংস হচ্ছে শিল্প সম্ভাবনা

0
  রণজিৎ ঘোষ উত্তরবঙ্গে একের পর এক সরকারি লাভজনক সংস্থা পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে। অথচ এই সংস্থাগুলির দিকে একটু নজর দিলে, একটু পরিকল্পনামাফিক চালানোর চেষ্টা হলে...
west bengal weather update

Weather Upadate | বঙ্গে বৃষ্টি কবে? স্বস্তির খবর শোনালো হাওয়া অফিস

0
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: তীব্র গরমে নাজেহাল বঙ্গবাসী। বৃষ্টি কবে হবে তা জানতেই যেন বেশি আগ্রহী প্রত্যেকে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বৃষ্টির ফোঁটাও নেই বঙ্গে।...

হল অফ ফেমের সেই মুখগুলো কোথায়

0
  সন্দীপন নন্দী আবার একটি দিন সমাগত। বিদ‍্যার্থী জীবনে সকলের অগ্নিপরীক্ষার সেই মাধ‍্যমিক ফল। এ যেন মেধা অন্বেষণের এক বার্ষিক গতি সমাপ্তির প্রত্যুষকাল। পাড়ায় পাড়ায়, অলিগলির...

Most Popular