জলপাইগুড়ি: সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘরের দরজা খুলেই চমকে ওঠেন জলপাইগুড়ির ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব অরবিন্দনগরের বাসিন্দা সঞ্জিত বণিক। তাঁর দরজার সামনেই জমে থাকা জলে এঁকেবেঁকে ঘুরে বেড়াচ্ছিল একটি ছোট সাপের মতো আকারের প্রাণী। তবে কিছুক্ষণ ভালো করে দেখার পর তিনি বুঝতে পারেন, প্রাণীটি আসলে একটি মাগুর মাছ। তবে বাড়ির দরজার সামনে এত বড় মাপের মাগুর মাছ কীভাবে এল, তা বুঝে উঠতে পারেননি তিনি। শেষমেশ ছেলের সহযোগিতা নিয়ে প্রায় ৩৯ মিনিটের চেষ্টায় মাছটিকে ধরতে সক্ষম হন তাঁরা। মাছটির ওজন হয়েছিল মোট ৩ কিলোগ্রাম ৬০০ গ্রাম।
সঞ্জিত বণিক জানান, রাতে বৃষ্টি হওয়ায় ঘরের সামনে কিছুটা জল জমেছিল। সেই জলে প্রাণীটিকে দেখে প্রথমে সাপ বলেই মনে করেছিলেন তিনি। কিন্তু যখন বুঝতে পারেন, সাপ নয়, প্রাণীটি আসলে একটি মাগুর মাছ। তারপরই মাছটিকে ধরার চেষ্টা শুরু করেন তিনি। ছেলে সায়ন বণিককে নিয়ে নেমে পড়েন মাছ ধরতে। ততক্ষণে খবরটি জানাজানি হয়ে যায় প্রতিবেশীদের মধ্যেও। প্রতিবেশীরাও এসে ভিড় জমাতে শুরু করেন তাঁর বাড়ির সামনে। জলের মধ্যে ঘুরে বেড়ানো মাছ ধরা তো আর সোজা কথা নয়! তাই মাছ ধরতে রীতিমতো নাকাল হতে হয় পিতা-পুত্রকে। ভয় ছিল, হাতে কাঁটা ফুটে যেতে পারে। তাই কিছুটা সাবধানতাও অবলম্বন করতে হচ্ছিল বটে। অবশেষে ৩৯ মিনিটের অক্লান্ত চেষ্টার পর মাছটি ধরে ফেলেন তাঁরা। আনা হয় একটি বড় মাপের গামলা। সেই গামলায় রাখার পর বিশালাকৃতি মাগুর মাছটিকে দেখতে প্রতিবেশীদের কৌতূহল যেন সহজে মেটার নয়। সকলেই বলাবলি করতে থাকেন এত বড় মাপের মাগুর মাছ তাঁরা আগে কখনও দেখেননি কেউই। অনেকেই বলাবলি করতে থাকেন, এত বড় সাইজের মাগুর মাছটি না জানি কত সুস্বাদু হবে। তবে প্রতিবেশীদের নিরাশ করেননি সঞ্জিত। বাড়ির সাধারণ বঁটিতে মাছটি কাটা সম্ভব না হওয়ায় কসাই ডেকে মাংস কাটার বড় মাপের বঁটি দিয়ে সেটি কাটা হয়। এরপর প্রতিবেশীদেরও কিছুটা অংশ বিতরণ করেন তিনি। এলাকার অনেকেই এদিন বিশালাকার মাগুর মাছের স্বাদ আস্বাদন করেছেন।
প্রতিবেশী পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ওই এলাকায় এত বড় মাপের মাগুর মাছ কোথা থেকে এল, তা নিয়ে এলাকাবাসী ধন্দে পড়েছেন। তবে মাছ ধরতে পিতা-পুত্র যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন, তা স্বীকার করতেই হয়। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে শুরু হয়েছিল মুষলধারে বৃষ্টি। এদিন জলপাইগুড়ি শহরে মোট ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। বাসিন্দাদের ধারণা শহরের বয়েলখানা বাজারের নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল থাকায় ওই এলাকার জল পূর্ব অরবিন্দনগরে ঢুকে পড়েছিল। সেই জলেই কোনওভাবে বিশালাকৃতি এই মাগুর মাছটি ভেসে এসেছিল।