উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ সম্প্রতি মণিপুরে তিন মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘোরানোর ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল গোটা দেশ। এবার একই ধরনের ঘটনা ঘটল রাজস্থানে। ২১ বছর বয়সি এক আদিবাসী যুবতীকে বিবস্ত্র করে ঘোরানো হয়েছে রাজস্থানের প্রতাপগড় জেলায়। এমনই এক ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই কার্যত অস্বস্থিতে পড়েছে গেহলট সরকার। এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে যুবতীর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত স্বামী সহ মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ডিজিপি উমেশ মিশ্র জানান, সেই নির্যাতিতা যুবতীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। যুবতী সম্প্রতি নিজের ঘর সংসার ছেড়ে পার্শ্ববর্তী এক গ্রামে থাকছিলেন অন্য এক পুরুষের সঙ্গে। এই বিষয়টি কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি যুবতীর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। এই আবহে প্রতাপগড়ের সেই গ্রামে গিয়ে সেই যুবতীকে অপহরণ করে তার স্বামী ও পরিবারের লোকেরা। এরপর যুবতীকে নিজের গ্রামে তুলে এনে নগ্ন করে ঘোরানো হয়।
আদিবাসী এই যুবতীকে নগ্ন করে ঘোরনোর ঘটনার ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে। ভিডিও ভাইরাল হতেই এই ঘটনার কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট নির্দেশ দিয়েছেন অপরাধ দমন শাখার এডিজিকে। মুখ্যমন্ত্রী গেহলট বলেন, ‘আমি পুলিশকে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করতে বলেছি। কড়া হয়ে পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছি।’ পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, তদন্তকারীদের মোট ৬টি দল গঠন করা হয়েছে অভিযুক্তদের সবাইকে গ্রেপ্তার করার জন্য।
প্রতাপগড়ের পুলিশ সুপার অমিত কুমার জানিয়েছেন, যুবতীকে নগ্ন করে ঘোরানোর ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে যুবতীর স্বামী সহ মোট তিনজনকে। অভিযুক্ত স্বামীকে ধরতে পুলিশ গ্রামে পৌঁছলে পুলিশকে দেখেই পালানোর চেষ্টা করে। সেই সময় পড়ে গিয়ে চোট পায় সে এবং বাকিরা। এই আবহে আপাতত অভিযুক্তদের হাসপাতালে ভরতি রাখা হয়েছে। সেখানে চিকিৎসা চলছে তাদের।
মণিপুরের ঘটনায় বিজেপিকে তুলোধোনা করেছিল বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের প্রতিটি শরিক দল। এবার রাজস্থানের ঘটনায় গেহলট সরকারকে তোপ দেগেছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে পোস্ট করে লেখা হয়েছে, ‘রাজস্থান আবারও লজ্জিত হল’। এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট পালটা সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘প্রতাপগড় জেলায় একটি ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে যার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে এক যুবতীকে বিবস্ত্র করে ঘোরানো হয়েছে পারিবারিক বিবাদের জেরে। এই ধরনের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের এই সমাজে কোনও স্থান নেই। অপরাধীদের যত দ্রুত সম্ভব জেলে ভরা হবে।’