উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ এখনও বিপন্মুক্ত নন রাজ্যে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। শ্বাসকষ্টজনিত কারণে শনিবার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। এখনও তাঁকে রাখা হয়েছে ভেন্টিলেশনে। ৪০ ঘণ্টার বেশি কেটে গিয়েছে। আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে খবর, আজ সকালে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ফুসফুসের সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। এখনও ভেন্টিলেশনেই রয়েছেন বুদ্ধদেব। শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক থাকলেও আগের তুলনায় অনেকটাই স্থিতিশীল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
জানা গিয়েছে, কয়েক দিন ধরেই জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সিওপিডি-তে আক্রান্ত তিনি। শুক্রবার থেকেই শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে তাঁর। শনিবার সকাল থেকেই ক্রমশ আচ্ছন্ন হয়ে যেতে থাকেন তিনি। এর পরেই ওই দিন বিকেল ৫টা নাগাদ বুদ্ধদেবকে তাঁর পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়ি থেকে আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক ভাবে জানা যায়, বুদ্ধদেবের দু’টি ফুসফুসেই নিউমোনিয়ার সংক্রমণ ছড়িয়েছে। পরে রক্ত পরীক্ষাতেও বেশ কিছু সমস্যা সমস্যা ধরা পরে। হাসপাতালে ভর্তির সময় শরীরে সামান্য জ্বর ছিল। হাসপাতালের মেডিক্যাল বুলেটিনেও জানানো হয়েছিল, শ্বাসনালীতে সংক্রমণ রয়েছে বুদ্ধবাবুর। এবং ‘টাইপ-২ রেসপিরেটরি ফেলিওর’ হয়েছে। ভর্তির পরেই মেডিক্যাল বোর্ড গড়ে তাঁর চিকিৎসা চলছে।
চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তী রবিবার বলেছেন, ‘‘সিডেশন (আচ্ছন্ন করে রাখার প্রক্রিয়া) কমিয়ে দেওয়ার ফলে উনি কানে শুনতে পাচ্ছেন। বুঝতে পারছেন, আশপাশটা অনুভব করতে পারছেন। আমরা ডাকলে উনি তাকাচ্ছেন, মাথা নাড়ছেন। কখনও কখনও ইশারায় ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বোঝানোরও চেষ্টা করছেন।’’ বুদ্ধদেবের ব্লাডগ্যাসের মাত্রা ধারাবাহিক ভাবে মাপা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন কৌশিক। তিনি আরও জানান, ব্লাডগ্যাসের মাত্রা ৫০-এর মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে বুদ্ধদেব এখনও বিপন্মুক্ত নন। বরং, সঙ্কটজনকই রয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা।
উল্লেখ্য, এ বার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসার জন্য মেডিসিনের চিকিৎসক কৌশিকের পাশাপাশি, ক্রিটিক্যাল কেয়ারের চিকিৎসক সৌতিক পাণ্ডা ও সুস্মিতা দেবনাথ, কার্ডিয়োলজির সরোজ মণ্ডল, পালমোনোলজিস্ট অঙ্কন বন্দ্যোপাধ্যায়, ইন্টারনাল মেডিসিনের ধ্রুব ভট্টাচার্য, অ্যানাস্থেশিয়ার আশিস পাত্র এবং হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার সপ্তর্ষি বসু ও চিকিৎসক সোমনাথ মাইতিকে নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে রবিবার মেডিক্যাল বোর্ডে সংক্রামক রোগ-বিশেষজ্ঞ দীপনারায়ণ মুখোপাধ্যায় এবং এন্ডোক্রিনোলজির সেমন্তী চক্রবর্তীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গত ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত চার বার হাসপাতালে ভর্তি করানো হল বুদ্ধদেবকে। তার মধ্যে ২০২১ সালে ভর্তি হয়েছিলেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে।