উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ ফোন করে উপপ্রধানের সাহায্য চাইল একটি কুকুর। এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে হুগলির গুপ্তিপাড়ায়। এই অবোলা কুকুরটি কোনওভাবে আটকে পড়েছিল পঞ্চায়েত অফিসে। সেখান থেকে মুক্তি পেতেই অবোলাপ্রাণীটি ফোন করে উপপ্রধানকে। ফোন পেয়েই পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে তালা খুলে মুক্ত করে কুকুরটিকে। এই কুকুরটি দপ্তরের ল্যান্ড লাইন থেকে উপপ্রধানকে ফোন করে কেঁদেকেটে সাহায্য চেয়েছিল। পথকুকুরের এমন কাণ্ডে গ্রামের লোকজনও অবাক।
অনেকেই ভাবছেন এ আবার হয় নাকি? সত্যিই এমন ঘটনাই ঘটেছে হুগলির গুপ্তিপাড়া-১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের দপ্তরে। জানা গিয়েছে, শনিবার, পঞ্চায়েতের বিদায়ী উপপ্রধান বিশ্বজিৎ নাগের কাছে একটি ফোন আসে। এদিন অফিস বন্ধ ছিল। বন্ধ অফিস থেকে পঞ্চায়েতের ল্যান্ড লাইন নম্বর থেকে ফোন আসায় অবাকই হন তিনি। ফোন তুলে দু’তিনবার হ্যালো বলেও কোনও সারাশব্দ পাননি বিশ্বজিৎবাবু। কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর একটি কুকুরের কান্নার ভৌওওও ভৌওওও শব্দ ভেসে আসে তাঁর কানে। বন্ধ অফিস ঘর থেকে আসা ফোনে কুকুরের আওয়াজ শুনে বিষয়টি ঠাওর করতে পারেননি বিদায়ী উপপ্রধান। তবে ব্যাপারটা জানতে কৌতুহলী হয়ে ওঠেন।
উপপ্রধান নিজের হাতে অফিসের ঘর খুলতেই দেখেন একটু কুকুর বসে তাঁর অফিসে। তিনি ‘আয়, আয়’ ডাক দিতেই গা ঝাড়া দিয়ে সে এক ছুটে বেরিয়ে রাস্তায় চলে যায়। তার ‘মুক্তির আনন্দ’ দেখে উপপ্রধানের মুখে তখন একগাল হাসি। তিনি বলেন, ‘পঞ্চায়েত অফিসের সামনে মোট ১১টি কুকুর থাকে। ওদের দেখভাল আমরাই করি। শনিবার তাদের একটি যে অফিসে ঢুকে রয়েছে, বুঝতে পারিনি।’ কিন্তু ফোনটা কে করল? উপপ্রধান বিশ্বাস করেন কুকুরই রিসিভার থেকে ফোনটা তুলেছিল। কারণ ওরা প্রায়শই দেখে যে তিনি ফোন তুলে কথা বলছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা যেমন কথা বলার পর ফোন রেখে দিই, অফিসে ঢুকে দেখলাম তেমনই ঠিক ভাবে রাখা আছে টেলিফোন। ওর টানাহ্যাঁচড়ায় পড়েও যায়নি।’
এই প্রসঙ্গে বিশ্বজিৎ আরও বলেন, তাঁর মোবাইলের সঙ্গে পঞ্চায়েতের ফোনটি হটলাইন করা আছে। কেউ হাত দিলেই মেসেজ চলে আসে। কুকুরটি কোনওভাবে ফোনটির হটলাইন ডায়াল করে বসে। নিজস্ব ভঙ্গিতে জানাতে চাইছিল, সে আটকে পড়েছে, সাহায্যের দরকার। পরে সেখানে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেছি। উপপ্রধান সারমেয়ের কাণ্ডে যতটা মুগ্ধ, ততটাই বিস্মিত অন্যরা। তাঁরা শুধু একটাই কথা বলছেন, ‘‘ফোনটা সত্যিই ও-ই করল?’’