নাগরাকাটাঃ বোনাস ইস্যুতে বন্ধ হয়েছিল ১৩ অক্টোবর। শ্রম দপ্তরের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দু দিনের মধ্যেই নাগরাকাটার নয়া সাইলি চা বাগান খোলার চুক্তি স্বাক্ষরিত হল। রবিবার ছুটির দিনেও অফিস খুলে জলপাইগুড়িতে ডেপুটি লেবার কমিশনারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে নয়া সাইলির জট খোলে। ঠিক হয়েছে সোমবার থেকেই বাগানটি ফের স্বাভাবিক হবে। আগামী ১৮ অক্টোবরের মধ্যে সেখানে ১৫.৫ শতাংশ হারের বোনাস দেওয়া হবে। পুজোর মুখে বাগান খুলে যাওয়ার খবরে এখন স্বস্তির শ্বাস ফেলছেন নয়া সাইলির ১১৫৪ জন শ্রমিক।
এদিকে বোনাস কে কেন্দ্র করেই বন্ধ হওয়া একই মালিকানাধীন মালবাজারের সাইলি চা বাগানকে নিয়ে আরও একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে সোমবার বেলা দুটো থেকে। পাশাপাশি শনিবার বন্ধ হওয়া বানারহাটের চামুর্চি নিয়েও আলাদা একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক রয়েছে সোমবার দুপুর ১২ টা থেকে। দুটি বৈঠকই ডেপুটি লেবার কমিশনারের দপ্তরে হবে। সব মিলিয়ে প্রায় হাজার তিনেক শ্রমিক এখন সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন। জলপাইগুড়ির ডেপুটি লেবার কমিশনার শুভাগত গুপ্ত বলেন, নয়া সাইলি খুলে যাচ্ছে। মালিকপক্ষ চুক্তি মোতাবেক বোনাসও মিটিয়ে দেবে। অন্য দুই বন্ধ বাগান খোলাতেও আমাদের প্রচেষ্টায় কোন খামতি রাখা হচ্ছে না।
এদিন নয়া সাইলির বৈঠকটি নানা ঘাত প্রতিঘাতে ভরা ছিল। প্রায় দিনভরের আলোচনার পর সমাধানসূত্র বের হয়। গত ১৩ তারিখ কর্ম বিরতির নোটিশ জারি করে সেখানকার পরিচালকরা বাগান ছেড়ে চলে যান। সমস্যার সূত্রপাত বোনাসের হার নিয়ে। ১২ অক্টোবর জলপাইগুড়িতে চা মালিকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (আইটিপিএ) ও টেরাই ইন্ডিয়ান প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (টিপা) সদস্যভুক্ত বাগানগুলির বোনাস বৈঠক থেকে নয়া সাইলি ও সাইলি শেষ মূহুর্তে বের হয়ে আসে। কর্মবিরতির নোটিশে নয়া সাইলির পরিচালকদের অভিযোগ ছিল তাঁদের ওপর ১৫.৫ শতাংশ হারের বোনাস ঘোষণা করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। যদিও শ্রমিকদের বক্তব্য ছিল ২০২২ এ এই বাগানে বোনাসের হার ছিল ১৭.৫ শতাংশ। মালিকরাই ১২ তারিখ রাতে নিজে থেকে ১৫.৫ শতাংশের কথা বলে বৈঠক ছেড়ে চলে যায়।
এদিনের বৈঠকের শেষে তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও নাগরাকাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঞ্জয় কুজুর বলেন, পুজোর আগে বাগান খুলছে। বোনাসও দেওয়া হবে। এর থেকে খুশির খবর আর কিই বা হতে পারে। শ্রম দপ্তরের প্রয়াসকে কুর্ণিশ জানাই। চা বাগান মজদুর ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক জিয়াউল আলম বলেন, অন্যায়ভাবে বাগান বন্ধ করা হয়েছিল। এভাবে অন্য যে বাগানগুলিও শ্রমিকদের দূর্দশা ফেলে বন্ধ করেছে তাঁরাও যাতে দ্রুত বোনাস দিয়ে বাগান খুলতে এগিয়ে আসে সেই দাবি জানাই। প্রোগ্রেসিভ প্ল্যান্টেশন ওয়ার্কাস ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কিরণ কালিন্দী বলেন, মালিকপক্ষ আর কখনো যাতে এমনটা না করে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। এদিনের বৈঠকে নয়া সাইলির পরিচালকদের পক্ষে ছিলেন জেনারেল ম্যানেজার সুনীল আগরওয়াল, ম্যানেজার মহেশ গুপ্তা, আইটিপিএ-র ডুয়ার্স শাখার সম্পাদক রাম অবতার শর্মা প্রমুখ।