বালুরঘাট: একদিকে দেখানো হচ্ছে আদি মাতৃশক্তি থেকেই মানব শিশু ও ছাগ শিশুর জন্ম। কোথাও আবার ফুটে উঠেছে ঘরের মেয়ে উমার ছবি। তার সামনেই ভিড় করে আছেন যুবক যুবতীরা। এভাবেই ছবির মেলাকে ঘিরে উচ্ছ্বাসে ভাসল বালুরঘাট তথা জেলার চিত্রশিল্পীরা। বালুরঘাটের মন্মথ নাট্যচর্চা কেন্দ্রের আর্ট গ্যালারিতে শুরু হয়েছে তিনদিনের চিত্র প্রদর্শনী। শুক্রবার এই অনুষ্ঠানের সূচনা করেন ডেপুটি কালেক্টর তথা নৃত্যশিল্পী নির্মিতা সাহা, বালুরঘাট পুরসভার প্রধান অশোক মিত্র সহ অন্যান্যরা। এই চিত্র প্রদর্শনীতে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পীরা তাদের আঁকা ছবি দিয়েছেন। যা ইতিমধ্যেই নজর কাড়ছে শহর তথা জেলাবাসীর।
বালুরঘাট ছাড়াও বুনিয়াদপুর, বংশীহারী, গঙ্গারামপুর সহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে চিত্রশিল্পীরা এই প্রদর্শনীতে জমায়েত হয়েছেন। জেলার ৪০ জন চিত্রশিল্পী তাঁদের ছবি এই প্রদর্শনীতে দর্শকদের জন্য সাজিয়েছেন। তাছাড়াও, পাশের জেলা উত্তর দিনাজপুর থেকেও শিল্পীরা এই প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন। রবিবার পর্যন্ত এই প্রদর্শনী চলবে। একাধিক মাধ্যমে আঁকা ছবি এই প্রদর্শনীর শোভা বাড়িয়েছে। এই প্রদর্শনীতে রাখার জন্য শতাধিক ছবি জমা পড়েছিল। তার মধ্যে ৭৪টি ছবি নির্বাচন করা হয়েছে। সেগুলি এই ছবি মেলায় প্রদর্শিত হচ্ছে। যেখানে নতুন প্রজন্মের চিত্রশিল্পীদের নজর কাড়া ভিড় ছিল। পাশাপাশি, বিভিন্ন বয়সের দর্শকদের দেখা মিলেছে এই ছবিমেলায়। এখানে স্কেচ, অ্যাক্রলিক, ওয়েল পেইন্টিং, প্যাস্টেলের ছবি ছাড়াও একাধিক অত্যাধুনিক মাধ্যমে ছবি প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়েছে।
স্নাতক তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া উর্যস্বী সরকার বলেন, ‘তিন বছর বয়স থেকে ছবি আঁকছি। অ্যাক্রলিকের ওপরে ছবি আঁকতে স্বচ্ছন্দ বোধ করি। এখানে মেঘ ভেদ করে সূর্যের আলো সমুদ্রে পড়ার দৃশ্য ছবিতে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আরও একটি ছবি ব্রাইট ক্যাপশনে প্রদর্শিত হচ্ছে।’ প্রথম বর্ষের পড়ুয়া আদিত্য ভট্টাচার্যের কথায়, ‘আট বছর বয়স থেকে ছবি আঁকছি। এখানে দুটো ছবি দিয়েছি। এখানে জন্মদাত্রী মা ও ঈশ্বরীয় মাকে এক করে দেখানো হয়েছে। বিভিন্ন মাধ্যমে ছবি আঁকলেও অ্যাক্রলিক বেশি পছন্দের।’
উদ্যোক্তা শিল্পী দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘শুক্রবার উদ্বোধনের পরেই সন্ধ্যায় ছবিপ্রেমীদের যথেষ্ট ভিড় হয়েছিল। বালুরঘাটে বরাবরই সংস্কৃতি ভাবাপন্ন মানুষের বাস। তাই এমন উদ্যোগ নেওয়ার সাহস দেখাতে পারি। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিল্পীরা এই ছবি মেলায় তাদের শিল্পকর্ম তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছে। এটাই বড় প্রাপ্তি। ছবির প্রতি ভালোবাসা এভাবেই ছোঁয়াচে হোক।’