উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বভারতীর ‘অপহৃত’ বিদেশি ছাত্র উদ্ধার হল ওডিশা থেকে। শনিবার বীরভূম এবং পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ওই ছাত্রকে উদ্ধার করা হল ওডিশা সীমান্ত থেকে। সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হল, বিদেশি পড়ুয়াকে অপহৃত আট যুবকেও। এদের মধ্যে চার জন পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা, বাকিরা হলেন বীরভূমের।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মায়ানমারের ওই পড়ুয়া চুল কেনাবেচার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সেই কারবারের টাকাপয়সা নিয়ে গন্ডগোল হওয়ার জন্য পড়ুয়াকে তাঁর ভাড়া বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই ঘটনায় মোট ১২ জন গ্রেফতার হয়েছেন। ধৃতদের মধ্যে চার জন জেলার বাসিন্দা। তিন জন দুবরাজপুরের এবং এক জন নানুরের। বাকি আট জন পূর্ব মেদিনীপুরের। বিশ্বভারতীর ওই পড়ুয়াকে সুস্থ অবস্থাতেই উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁকে জেলায় নিয়ে আসা হচ্ছে। পূর্ব মেদিনীপুর এবং বীরভূম পুলিশের যৌথ অভিযানে ওডিশা সীমান্ত থেকে আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বীরভূমের পুলিশ তদন্ত করছে।’’
বৃহস্পতিবার বিশ্ব ভারতীর এক গবেষককে বোলপুরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইন্দিরাপল্লির ভাড়াবাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে যায়, ২০১৫ সাল থেকে ওই পড়ুয়া মায়ানমার থেকে বিশ্বভারতীতে আসেন পড়তে। বর্তমানে তিনি সংস্কৃত বিভাগের পিএইচডি স্কলার। ইন্দিরাপল্লি এলাকায় একটি একতলা বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন তিনি।১২-১৪ জন একাধিক গাড়িতে করে এসে ওই বিদেশি পড়ুয়াকে অপহরণ করে। দুবরাজপুরের আজারুদ্দিন মির্ধা, শেখ আলাউদ্দিন ও আতাউল্লা শেখ নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁরা এলাকা চুলের ব্যবসা করতেন।তাদের সঙ্গে ওই পড়ুয়াও কাজ করতেন। ধৃতদের জিজ্ঞসাবাদে উঠে আসে আর্থিক লেনদেনের কথা। ধৃতদের বিদেশি পড়ুয়ার ছ’কোটি টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি দিয়েছিলেন পাঁচ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা।আর বাকি ৫০ লক্ষ টাকা নিয়ে বাঁধে গন্ডগোল।এরপর ওই পড়ুয়াকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয় ওড়িশার তালসারি সমুদ্র সৈকতের কাছে। পুলিশ সিসিটিভি এবং ফোনের সুত্র ধরে তাঁদের খোঁজ পায় পুলিশ।সেই মতো পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে শুরু হয় অভিযান।এই ঘটনার সূত্র ধরে আন্তর্জাতিক চক্রে হদিস মিলেছে বলে খবর তদন্তকারীদের সূত্র।