জলপাইগুড়ি: মঙ্গলবারই বিচারক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়(Abhijit Gangopadhyay)। তাঁর এই পদক্ষেপ মেনে নিতে পারছেন না জলপাইগুড়ি(Jalpaiguri) সার্কিট বেঞ্চের বিচারপ্রার্থী, কোর্ট কর্মী এবং সাধারণ মানুষ। পদত্যাগের খবর শোনার পরেই তাঁরা মুষড়ে পড়েছেন। কলকাতা হাইকোর্টের মতো এখানকার সার্কিট বেঞ্চে বিচার প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে আর দেখা যাবে না। জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে এদিন আদালত চত্বরে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়েই চর্চা হয়েছে। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে আদালতের বাইরে বিচারপ্রার্থীদের বসবার জায়গাতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন এই বিচারপতি।
কালিম্পং থেকে সুভাষ মণি সিংহ মামলার প্রয়োজনে জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে এদিন এসেছিলেন। তিনি বললেন, ‘সংবিধান অনুসারে বিচার ব্যবস্থায় একজন বিচারপতি দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে গেলেন। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ঐতিহাসিক রায়গুলির কথা বহুদিন পশ্চিমবঙ্গের মানুষ মনে রাখবেন। কোনও পদে কেউ চিরস্থায়ী হয় না। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর মেয়াদের পুরো সময় সম্পূর্ণ করলে মানুষের আরও কল্যাণ হত।’
সার্কিট বেঞ্চের কর্মী মহম্মদ হারুন বলেন, ‘জলপাইগুড়িতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিভিন্ন সার্কিটে মামলার বিচার করতে এসেছেন। তাঁর অনুপস্থিতি আমাদেরকে খুবই ব্যথিত করবে।’
সাকির্ট বেঞ্চের পাশেই ছোট্ট চায়ের দোকান শংকর দাসের। এই দোকানে আইনজীবী থেকে শুরু করে বিচারপ্রার্থীরা চা এবং জলখাবার খেতে আসেন। চায়ের দোকানের দোকানদার শংকর বলেন, ‘বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর রায়ের মাধ্যমে নকশালবাড়ি গ্রামে পরিস্রুত পানীয় জল পরিষেবা চালু করতে প্রশাসনকে বাধ্য করেছেন। শিক্ষা ক্ষেত্রে যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন। বিচার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সফল। তবে রাজনীতির ক্ষেত্রে তিনি কতটা সফল হবেন – তা নিয়ে সন্দিহান। এ প্রশ্নের উত্তর সময় বলবে।’
শহরের অন্যতম ব্যবসায়ী আনন্দ ঘোষের কথায়, ‘বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আমাদের অহংকার। তিনি বিচার ব্যবস্থার বর্তমান পরিকাঠামোর মধ্যে যে কাজ করে গেলেন তা অভিনন্দনযোগ্য। মানুষ এই বিচারপতিকে শ্রদ্ধা করবেন।’
গোপাল বণিক বলেন, টিভির পর্দায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পদত্যাগের সংবাদ শুনে মর্মাহত হয়েছি। শিক্ষা ক্ষেত্রে পাহাড়সমান দুনীর্তির ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করার দিশা দেখিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তা নিয়ে লক্ষাধিক চাকরিপ্রার্থী খুশি হয়েছেন।’