জলপাইগুড়ি: ভুয়ো নার্সিং ট্রেনিং সেন্টার (Fake Nursing Training Center) মামলায় অভিযুক্ত অনুস্মিতা শর্মা অবশেষে আদালতে আত্মসমর্পণ (Surrender) করলেন। তিনি এই মামলার মূল অভিযুক্ত শান্তনু শর্মার স্ত্রী। তাঁর বিরুদ্ধেও ছাত্রীদের তরফে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। দীর্ঘ কয়েক মাস ফেরার থাকার পর সোমবার জলপাইগুড়ি মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাঁর জেল হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
আদালত সূত্রে খবর, অনুস্মিতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু হাইকোর্ট (High Court) সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। জলপাইগুড়ি আদালতের সহকারী সরকারি আইনজীবী মৃন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘অনুস্মিতা শর্মা এদিন আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাঁর জেল হেপাজত হয়েছে। ৭ ফেব্রুয়ারি তাঁকে ফের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।’ ভুয়ো নার্সিং ট্রেনিং মামলার মূল অভিযুক্ত শান্তনু শর্মা প্রায় দেড় মাস ধরে জেল হেপাজতেই রয়েছেন।
গত বছর সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ জলপাইগুড়ি শহরের পান্ডাপাড়ায় ভুয়ো নার্সিং ট্রেনিং সেন্টারের বিষয়টি স্বাস্থ্য দপ্তরের নজরে আসে। সেই সময় শান্তনুকে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরে ডেকে পাঠিয়ে মুচলেকা দিয়ে সেন্টারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপরই ওই সেন্টারের প্রতারিত ছাত্রীরা জেলা শাসককে লিখিত অভিযোগ জানান। সেইসঙ্গে কোতোয়ালি থানায় শান্তনু এবং তাঁর স্ত্রী অনুস্মিতার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। থানায় অভিযোগ দায়ের হতেই সস্ত্রীক পালিয়ে যান শান্তনু। প্রায় তিন মাস গা-ঢাকা দিয়ে থাকার পর ১৩ ডিসেম্বর তিনি জলপাইগুড়ি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাঁর জেল হেপাজতের নির্দেশ দেয়। পরবর্তীতে তদন্তের স্বার্থে পুলিশ আদালতের কাছে আবেদন জানিয়ে শান্তনুকে নিজেদের হেপাজতে নেয়।
পুলিশ শান্তনুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে, নার্সিংয়ের ভুয়ো সার্টিফিকেট দিয়ে প্রায় তিন কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। সেই রিপোর্ট এর আগে পুলিশ আদালতের কাছে পেশ করেছে। আদালতের অনুমতি নিয়ে পুলিশ ইতিমধ্যে শান্তনুর একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে। ছাত্রীদের অভিযোগ ছিল, ট্রেনিং সেন্টারে সবসময় শান্তনুর সঙ্গেই থাকতেন তাঁর স্ত্রী অনুস্মিতা। ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন কোর্স সম্পর্কে বোঝানো এবং ভর্তির বিষয়টি অনুস্মিতাই দেখতেন। ছাত্রীদের অভিযোগ, এই প্রতারণার ঘটনায় অনুস্মিতাও সমানভাবে দোষী।