রণজিৎ ঘোষ, দার্জিলিং: দার্জিলিংয়ের (Darjeeling) বিভিন্ন পর্যটনস্থলের (Tourist Places) প্রবেশমূল্য অস্বাভাবিক বাড়িয়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ পর্যটকরা (Tourist)। পদ্মজা নাইডু চিড়িয়াখানা থেকে শুরু করে টাইগার হিল, রক গার্ডেন সর্বত্রই অতিরিক্ত প্রবেশমূল্য দিতে হচ্ছে। এর জেরে অনেকেই এড়িয়ে যাচ্ছেন দর্শনীয় স্থান। দার্জিলিংয়ের স্থানীয় গাড়িচালকদেরও মত, বিভিন্ন পর্যটনস্থল ঘোরার জন্য বুকিং অনেক কমে গিয়েছে। পর্যটনস্থলগুলির প্রবেশমূল্য বাড়িয়ে দেওয়ায় পর্যটকরা সেখানে যেতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ফলে গাড়ির ব্যবসাও মার খাচ্ছে।
গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক এসপি শর্মা বলছেন, ‘দীর্ঘদিন ওই পর্যটন কেন্দ্রগুলি রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। প্রবেশমূল্যও বহু বছর ধরে অনিয়মিত ছিল। এখন সব জায়গায় পর্যটকদের জন্য বিমা করা সহ বিভিন্ন পরিষেবা চালু করা হচ্ছে। সেইজন্য প্রবেশমূল্য বাড়ানো হয়েছে।’
দার্জিলিংয়ে বর্তমানে দেশ-বিদেশের প্রচুর পর্যটক রয়েছেন। এর মধ্যে এরাজ্যের এবং বাংলাদেশের বাঙালি পর্যটকের সংখ্যাই বেশি। পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিকাল পার্কের (দার্জিলিং চিড়িয়াখানা) সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ থেকে আসা সৌফিক আহমেদ বললেন, ‘ছেলে দার্জিলিংয়ে পড়াশোনা করে। বছরে অন্তত দু’বার দার্জিলিংয়ে আসি। এর আগে যতবার এসেছি, এখানে ৬০ টাকা করে প্রবেশমূল্য নিয়েছে। এবার তা বেড়ে ১১০ টাকা হয়ে গিয়েছে। এত বেশি টাকা দিয়ে ক’জন পর্যটক এই চিড়িয়াখানায় ঢুকবে? প্রবেশমূল্য বাড়ানোর আগে কর্তৃপক্ষের এসব ভাবা উচিত ছিল।’
ম্যালে দাঁড়িয়ে কলকাতার শোভাবাজারের ছন্দা সেনের গলাতেও ক্ষোভ, ‘টাইগার হিল গিয়েছিলাম। সেখানে আগে মাথাপিছু ২০ টাকা করে নিত বলে শুনেছিলাম। এবার মাথাপিছু ৭০ টাকা করে নিয়েছে। কিন্তু একটা বসার জায়গা পর্যন্ত নেই। তাহলে এত টাকা কেন দেব? আমরা আগে বুঝিনি, তা না হলে টিকিট কাউন্টারের ওখান থেকেই ফেরত আসতাম।’
টাইগার হিলে কয়েক বছর ধরে প্যাভিলিয়ন ভেঙে রয়েছে। পর্যটকদের খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। দ্রুত ওই প্যাভিলিয়ন তৈরির দাবিতে প্রচুর আলোচনা, বিতর্ক হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। হ্যাপি ভ্যালি, রক গার্ডেনের মতো পর্যটনস্থলগুলিতেও প্রবেশমূল্য বাড়িয়ে দ্বিগুণ করেছে জিটিএ। হ্যাপি ভ্যালিতে প্রবেশের জন্য ৫০ টাকার জায়গায় এখন ১০০ টাকা দিতে হচ্ছে। মালদার বাসিন্দা সন্দীপ দত্তর কথায়, ‘প্রবেশমূল্য বাড়ানো হয়েছে, কিন্তু পরিষেবা বলতে কিছুই নেই। আমরা চাই পর্যটনস্থলগুলিতে পানীয় জল, শৌচালয় এসবের ব্যবস্থা করা হোক।’
দার্জিলিং অ্যাসোসিয়েশন অফ টুর এজেন্টস (ডাটা)-এর সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ লামাও বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত। তিনি বলছেন, ‘প্রত্যেকটি পর্যটনস্থলের প্রবেশমূল্য দ্বিগুণ করে দেওয়া। এর ফলে প্রচুর পর্যটক সাইট সিনে যাচ্ছেন না। আমাদের এখানে সাতটি, পাঁচটি এভাবেই সাইট সিনের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু কোনওটিতেই আর লোক হচ্ছে না।’