উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ গত ২ মাস ধরে মণিপুরে যে ন্যাশনাল হাইওয়ে স্তব্ধ ছিল, তা এবার থেকে খুলে যাচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের আবেদনের পর মণিপুরের জাতীয় সড়কে দু’মাস পর অবরোধ তুলে নিল কুকি সংগঠনগুলি। গত মে মাসে মণিপুরে অশান্তি শুরু হওয়ার পর থেকে এনএইচ-২ বা ইম্ফল-ডিমাপুর জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়েছিল। অবরোধ করে রেখেছিল ইউনাইটেড পিপলস ফ্রন্ট ও কুকি ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন এই দুই কুকি উপজাতি সংগঠন। এই দুই সংগঠনের তরফে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে তারা জানিয়েছে, জাতীয় সড়কের অবরোধ অবিলম্বে তুলে নেওয়া হচ্ছে। অবরোধ উঠে যাওয়ায় মণিপুরের পরিস্থিতি কিছুটা হলেও স্বাভাবিক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মণিপুরের ওপর দিয়ে গিয়েছে দুটি ন্যাশনাল হাইওয়ে। একটি এনএইচ-২ অন্যটি, এএইচ-৩৭। এনএইচ-২ ইম্ফল-ডিমাপুরের রাস্তায় পড়ে। আর এনএইচ-৩৭ পড়ে ইম্ফল জিরিবামের রাস্তায়। মণিপুরে ৩ মে থেকে শুরু হয়েছে সংঘাত। সেই সময় থেকেই এই রাস্তাগুলি অবরোধ রয়েছে। কুকি সংগঠনগুলি এই রাস্তা অবরোধের ডাক দিয়েছিল। এদিক, অশান্ত মণিপুরে ক্রমাগত দাবানলের মতো ছড়িয়ে যায় বিদ্রোহের আগুন। ১০০ এরও বেশি মানুষ মারা যান সেখানে। হিংসা বিধ্বস্ত বহু এলাকায় মানুষকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়। বিদেশ প্রতিমন্ত্রী রঞ্জন সিংহের বাড়িতে পেট্রল বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে। মণিপুর সরকারের একমাত্র মহিলা মন্ত্রী কাংপোকপি কেন্দ্রের বিধায়ক নেমচা কিগপেনের বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছিল বিক্ষুব্ধ জনতা। রাজ্যের জনস্বাস্থ্য, কারিগরি এবং ক্রেতাসুরক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী এল সুসীন্দ্র মেইতেইয়ের বাড়ি সংলগ্ন একটি গুদামঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। বিরোধীরা মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহ পদত্যাগের সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেছিলেন। পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে তিনি পিছু হটেন। অশান্তির মধ্যেই সে রাজ্যে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু তার পরও পরিস্থিতির বদল ঘটেনি। পরে অবশ্য শাহের কথাতেই অবরোধ উঠল।
উল্লেখ্য, এই দুই সংগঠন এমন একটি গোষ্ঠী যারা আগে উগ্রপন্থী গোষ্ঠী হিসাবে প্রমাণিত হলেও পরে তারা সরকারের সঙ্গে সন্ধির রাস্তা নেয়। তারাই জানিয়েছে যে, মণিপুরের কাংপোকপিতে তারা ন্যাশনাল হাইওয়ের রাস্তা বনধ তুলে নিচ্ছে। এর আগে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ সমস্ত গোষ্ঠীকে বনধ তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন। তিনি মস্ত পক্ষকে শান্তির রাস্তা অবলম্বনের বার্তা দেন। এরপরই আসে এমন পদক্ষেপ।