বালুরঘাট: পাঁচ বছর আগে প্রদর্শনের জন্য বালুরঘাটে নিয়ে আসা হয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনার জেট প্লেন। কিন্তু সেই যুদ্ধ বিমান যথাযোগ্য মর্যাদায় প্রতিস্থাপনের অর্থ বরাদ্দ হয়নি আজও। ফলে বর্তমানে আগাছায় ডুবতে শুরু করেছে দেশের বায়ুসেনার বিমান। শহরের রঘুনাথপুরের প্রাক্তন সৈনিক বিভাগে বছরের পর বছর ধরে এমনই পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে বায়ুসেনার দীপক এইচপিটি-৩২ জেট প্রপেলার এয়ারক্র্যাফট নামক ওই বিমানটি।
১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতীয় সেনা ও নৌসেনার পাশাপাশি বড় ভূমিকা পালন করেছিল ভারতীয় বায়ুসেনা। যে বায়ুসেনার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে দেশের নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সৈনিক বোর্ড ভারতীয় বায়ুসেনার একটি বিমানকে বালুরঘাট জেলা সৈনিক বোর্ডের অফিস চত্বরে প্রতিস্থাপন করতে চেয়েছিল। সেই নিরিখে বায়ুসেনার ইস্টার্ন কমান্ডের কাছে বিমান চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল জেলা সৈনিক বোর্ড। এরপরেই ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে বালুরঘাটে নিয়ে আসা হয় ভারতীয় বায়ুসেনার দীপক এইচপিটি-৩২ জেট প্রপেলার এয়ারক্র্যাফট। যে খবর ছড়িয়ে পড়তেই ভারতীয় বায়ুসেনার ওই বিমানটি দেখতে ও তার খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ করতে জেলা সৈনিক ভবনে প্রতিদিনই ভিড় জমাত খুদে স্কুল পড়ুয়ারা। দেশের বায়ুসেনার ওই বিমান ঘিরে পড়ুয়াদের এমন উৎসাহ দেখে বিমানটিকে প্রতিস্থাপন করার জন্য ২০১৯ সালে অর্থ বরাদ্দের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানায় জেলা সৈনিক বোর্ড। কিন্তু আজও সেই বিমান প্রতিস্থাপনের জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ হয়নি। যার জেরে জেলা সৈনিক বোর্ডের ভবন চত্বরে আগাছায় নিমজ্জিত হতে চলেছে ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান দীপক। ভারতীয় বায়ুসেনার ওই বিমানটিকে প্রতিস্থাপনের জন্য কয়েক লক্ষ টাকার প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন তারা। যে সামান্য পরিমাণ অর্থ এতদিনেও বরাদ্দ না হওয়ায় আক্ষেপ তাদের। অন্যদিকে, শুধু টাকার অভাবে ভারতীয় বায়ু সেনার ওই বিমানটি এভাবে পড়ে থাকাটা শোভনীয় নয় বলে মত বালুরঘাটের বাসিন্দাদের। যদিও মাঝে করোনার জন্য দু’বছর সমস্ত প্রক্রিয়া পিছিয়ে গিয়েছে বলে স্বীকার করেছেন কর্তৃপক্ষ।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সৈনিক বোর্ডের ওয়েল ফেয়ার অর্গানাইজার হেমন্তকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘বিমানটিকে স্থাপনের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়ে সাংসদ তহবিলের অর্থের জন্য জেলা প্রশাসনের নির্দিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হয়েছিল। প্রথমবার এস্টিমেট করার পরে আবার নতুন করে এস্টিমেট করে পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল। সেটাও দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের পর যেই সাংসদ হোক না কেন, তাকে বলতে হবে। এটি মর্যাদার সঙ্গে প্রতিস্থাপনের জন্য ছয় থেকে সাত লক্ষ টাকার মতো খরচ পড়বে। আমরা আশাবাদী আজ নয় কাল এই কাজ হবে।‘