মণীন্দ্রনারায়ণ সিংহ, আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) শহরতলি এলাকায় কোথাও নেতা, কোথাও ব্যবসায়ী, এমনকি ঠিকাদাররাও ছোট পডুয়াদের মাঠ দখলে রেখে তাদের খেলাধুলোচর্চার সুযোগ কার্যত কেড়ে নিয়েছে। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ যেখানে সব স্কুলের পডুয়াদের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় (Annual sports competition) শামিল করতে বলছে, সেখানে পডুয়ারা (students) নিজেদের স্কুলের মাঠ থেকেও খেলার চর্চা করার সুযোগ পাচ্ছে না। প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, ঠিকাদারদের দাপটে স্কুলের শিক্ষকরাও মাঠ ফাঁকা করতে পদক্ষেপ করছেন না। আলিপুরদুয়ার শহরতলির শোভাগঞ্জ এলাকায় সদানন্দ প্রাথমিক স্কুলের মাঠ দখল করে বালি-পাথরের কারবার চালানোর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ছাড়াও ঠিকাদাররাও মাঝেমধ্যে নির্মাণসামগ্রী পডুয়াদের খেলার মাঠেই ফেলে রাখছেন। ওই বিদ্যালয়ের টিচার-ইনচার্জ শ্যামল বর্মন বলেন, ‘মাঠে নির্মাণসামগ্রী রাখায় সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি স্থানীয় পঞ্চায়েতে সদস্যের নজরে আনা হয়েছে।’
ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য রিমি সাহা রায়ের কথায়, ‘বিষয়টি নজরে আসতেই স্কুল মাঠে রাখা নির্মাণসামগ্রী সরানোর বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়।’
সদানন্দ প্রাথমিক স্কুলের মাঠের চারদিকে বাউন্ডারি না থাকায় মাঠে বহিরাগতরা অবাধে প্রবেশ করে। তবে বাণিজ্যিক এলাকা হওয়ায় খোলা মাঠের সুযোগে সেখানে মাঝেমধ্যে নির্মাণসামগ্রী ফেলে কারবার চালানো হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ী ছাড়া অনেক সময় ঠিকাদাররাও ওই মাঠে নির্মাণসামগ্রী ফেলে কাজ করেন। এভাবে বিভিন্ন সময় মাঠকে নির্মাণসামগ্রী রাখার কাজে ব্যবহার করায় স্কুলের খেলার মাঠটিই পাথরকুচি ছড়িয়ে পড়ায় খেলাধুলোর অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। অভিভাবকরা জানিয়েছেন, মাঠে ওই দখলদারির জন্য স্কুলের ছোট পডুয়াদের খেলার চর্চা হয় না।
আলিপুরদুয়ার শহরতলির জংশন এলাকায় বিধান স্মৃতি অ্যাডিশনাল প্রাইমারি স্কুলের মাঠ দখল করে বালি-পাথরের মতো নির্মাণসামগ্রী রেখে বিতর্কে জড়িয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সহ সভাপতি প্রণবকুমার দে (মানিক)। শাসকদলের নেতা অট্টালিকা নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন প্রাথমিকের স্কুল মাঠ ব্যবহার করায় ওই স্কুলের আউটডোর খেলাধুলো কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান পরিতোষ বর্মন বলেন, ‘স্কুলের মাঠ দখল করে কোনও কারবার চলতে পারে না। ছোট পড়ুয়াদের নিজেদের স্কুলের মাঠে খেলাধুলোর চর্চা যাতে কোথাও বিঘ্নিত না হয়, তা নিশ্চিত করতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে জেলার সমস্ত অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে নির্দেশ পাঠানো হচ্ছে।’