আলিপুরদুয়ার: চলন্ত ট্রেনে চার বছরের শিশুর গলায় ছুরি ধরে ছিনতাইয়ের চেষ্টার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল। যদিও সহযাত্রীরা রুখে দাঁড়ানোয় শেষপর্যন্ত ‘কার্যসিদ্ধি’ হয়নি সেই দুষ্কৃতীর। তাকে ধরে জিআরপির হাতে তুলে দিলেন যাত্রীরা। সোমবার রাত প্রায় দশটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে চলন্ত ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসে (Intercity Express)। ধৃতের নাম সুজিত কুমার। মঙ্গলবার তাকে আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) আদালতে তুলে পাঁচদিনের পুলিশ হেপাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জিআরপি সূত্রে খবর।
যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, ট্রেনটি তখন রাজাভাতখাওয়া স্টেশন (Rajabhatkhawa Station) অতিক্রম করে আলিপুরদুয়ার জংশন স্টেশনের (Alipurduar Junction) দিকে ঢুকছিল। সেই সময় অভিযুক্ত ছুরি নিয়ে চড়াও হয়। লুটপাটের পরিকল্পনার অভিযোগ উঠেছে। তবে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই বিষয়ে এখনই কিছু স্পষ্ট করে বলতে চাইছেন না জিআরপি এবং আরপিএফের কর্তারা। তবে অভিযুক্ত দিল্লিনিবাসী বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে রেল পুলিশ। তার কাছ থেকে সেই ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। জিআরপি’র আলিপুরদুয়ার জংশনের আইসি বিমান সরকারকে ফোনে পাওয়া যায়নি। আর জিআরপি’র আলিপুরদুয়ার জংশনের ইনস্পেকটর অরুণকুমার সিং বলেন, ‘অভিযুক্তকে রাতেই গ্রেপ্তার করে জিআরপির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
জিআরপি ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ার শহরের বাসিন্দা দীপেশ সরকার ও তাঁর পরিবারের লোকজন শিলিগুড়ি বেড়াতে গিয়েছিলেন। তাঁদের সঙ্গে দুই শিশু ছিল। শিলিগুড়ি থেকে ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসে আলিপুরদুয়ার জংশনের উদ্দেশে রওনা দেন। হাসিমারা-কালচিনি এলাকায় ট্রেন প্রায় ফাঁকা হয়ে যায়। রাজাভাতখাওয়া অতিক্রম করতেই এক মাস্ক পরা দুষ্কৃতী পরিবারের খুদে সদস্যের গলায় ছুরি ধরলে সকলে হতভম্ব হয়ে পড়েন। অভিযুক্তের কাছ থেকে শিশুকে বাঁচাতে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। শোরগোল শুনে আশপাশ থেকে কয়েকজন যাত্রী চলে আসেন। তবে তাঁরা প্রথমে পারিবারিক অশান্তি ভেবেছিলেন। তাই এগোতে চাননি। আর সেই সুযোগে অভিযুক্ত ছুটে পালানোর চেষ্টা করে। তারপর তাঁরা বিষয়টি ট্রেনের এসকর্ট দলকে জানান। পরে এসকর্ট দলকে সঙ্গে নিয়ে ট্রেনে অভিযান চলে। অভিযুক্ত ততক্ষণে নিজের পোশাক এমনকি মুখের মাস্কও খুলে ফেলে। তা সত্ত্বেও প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযুক্তকে শনাক্ত করেন।
এই ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালও। নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করার দিকে রেলের নজর দেওয়া উচিত, মন্তব্য তাঁর। আর বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মিঠু দাসের কথায়, ‘রেল পুলিশ ছাড়াও রাজ্য পুলিশের উপরেও নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া রয়েছে।’