আলিপুরদুয়ার: ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এফএসএসএআই)-র তরফে এক নির্দেশিকায় জানানো হয়েছিল, বাধ্যতামূলকভাবে ‘বেস্ট বিফোর’ কিংবা ‘এক্সপায়ারি ডেট’ (Expiry date) লিখতে হবে সমস্ত মিষ্টির ক্ষেত্রে। কিন্তু সেই নির্দেশিকা কি পালন করা হয়? আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) শহরের প্রায় বেশিরভাগ মিষ্টির দোকানই এই নির্দেশিকাকে এড়িয়ে গিয়েছে। কোনও দোকানেরই মিষ্টির ট্রে’র সামনে ‘বেস্ট বিফোর’ লেখাটি দেখা যায় না। তাই ঠিক কবে মিষ্টি তৈরি হয়েছে আর কতদিন পর্যন্ত তা খাওয়া যাবে সেটা স্পষ্ট নয় গ্রাহকদের কাছে। এবিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাইছেন শহরবাসী।
এর আগেও বিরিয়ানির দোকান, মিষ্টির দোকান এবং বিভিন্ন হোটেলে আচমকা হানা দিয়েছেন মহকুমা শাসক বিপ্লব সরকার। এবার এমনই এক অভিযান হোক, চাইছেন শহরবাসী। মিষ্টির ট্রেতে এক্সপায়ারি ডেট নেই, নির্দেশিকাকে অমান্য করা হচ্ছে, এতে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা চাইছেন মহকুমা শাসকের হস্তক্ষেপ। কিন্তু কেন এই নির্দেশিকা অমান্য করা হচ্ছে? এনিয়ে মিষ্টি ব্যবসায়ীদের সাফাই, গ্রাহকরা জানতে চাইলে মুখেই বলে দেওয়া হয়।
মহকুমা শাসককে এবিষয়ে জানানো হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। মিষ্টির দোকানে অনিয়ম দেখলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শহরের এক মিষ্টির দোকানের ম্যানেজার মনোতোষ দাস বলেন, ‘চার্ট বা ট্রে’র মধ্যে লিখে রাখা না থাকলেও গ্রাহকরা মিষ্টি কেনার সময় কবে তৈরি তা জানতে চাইলে মৌখিকভাবেই তারিখ বলে দেওয়া হয় বা কতক্ষণ পর্যন্ত মিষ্টি রাখা যাবে বলে দেওয়া হয়। আপাতত কোনও সমস্যা হচ্ছে না।’ মিষ্টি কিনতে এসেছিলেন মৌমিতা সরকার। তিনি বলেন, ‘মিষ্টি এমন একটি জিনিস যা ছোট থেকে বড়, সকলের কাছেই খুব প্রিয়। তাই কোন মিষ্টি কবে তৈরি হয়েছে বা কতদিনের আগে খাওয়া যেতে পারে জানা থাকলে সুবিধে হয় মিষ্টি কিনতে।’
একই বক্তব্য দীপক দাসেরও। তিনি জানান, মিষ্টির দোকানে এসে বোঝা যায় না, কোনটা টাটকা, কোনটা বাসি। তাই অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অন্য সামগ্রীর মতো মিষ্টিতেও এক্সপায়ারি ডেট থাকা উচিত।
মিষ্টি ব্যবসায়ীদের অবশ্য দাবি, সময়ের অভাবে এক এক করে তারিখ না লেখা থাকলেও টাটকা মিষ্টিই দেওয়া হয়ে থাকে। ব্যবসায়ী দীপক ঘোষ বলেন, ‘একটি মিষ্টি কতটা সময় সঠিক থাকতে পারে সেই বিষয়ে ধারণা হয়ে গিয়েছে। তাই এখন আর লিখে রাখার প্রয়োজন পড়ে না।’
আলিপুরদুয়ার মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক অশোক পালের কথায়, ‘নির্দেশিকা অনুযায়ী বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে ট্রে’র সামনে এক্সপায়ারি ডেট লিখে রাখার কথা বললেও অনেক মিষ্টির দোকানে এই ব্যবস্থা নেই এখনও পর্যন্ত। তবে কোনও কোনও দোকানে চার্টের মাধ্যমে বিভিন্ন মিষ্টির নামের পাশাপাশি এক্সপায়ারি ডেট লিখে রাখা হয়। সময়ের অভাবে আবার সেই চার্টগুলি আপডেট করা হয় না।’
তিনি জানান, দুধ চমচম, রসমালাই, মালাই চপের মেয়াদ ৮ ঘণ্টা, রসগোল্লা ২৪ ঘণ্টা, শুকনো মিষ্টি ৩৬ ঘণ্টা পর্যন্ত ঠিক থাকতে পারে। অন্যদিকে এবিষয়ে ফুড সেফটি অফিসার মিমি অধিকারী বলেন, এখনও কিছু বলা যাচ্ছে না। যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলবে।