নাগরাকাটা: ‘চা বাগানের জন্য দু’বছর আগের কেন্দ্রীয় বাজেটে যে এক হাজার কোটি টাকার কথা বলা ছিল তা কোথায় গেল? টি বোর্ড কেন চা শ্রমিক পরিবারের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য স্টাইপেন্ডের টাকা বন্ধ করল? পিএফ-এর সীমাহীন দুর্নীতি এসবের জবাব শুভেন্দু অধিকারী, জন বারলা, মনোজ টিগ্গাদের দিতে হবে।’ মঙ্গলবার নাগরাকাটার আদিবাসী সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রে কর্মশালায় যোগ দিয়ে এমনটাই বললেন তৃণমূল কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউিসি’র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।
কেন্দ্র সরকার যে শ্রমিকদের ৮ ঘন্টা কাজের অধিকার কেড়ে নিয়ে ১২ ঘন্টা করতে চাইছে তা নয়া শ্রম কোডের মাধ্যমেই পরিষ্কার বলে এদিন তোপ দাগেন তৃণমূলের চা শ্রমিক নেতারা। ঋতব্রতর বক্তব্য, এই শ্রম কোডের বিরোধিতা একমাত্র পশ্চিমবঙ্গ ও এম কে স্ট্যালিনের তামিলনাড়ু সরকার করেছিল। যে সিপিএম শ্রমিক স্বার্থ নিয়ে বড় বড় কথা বলে ওঁদের রাজত্বে থাকা কেরল সরকার কিন্তু টুঁ শব্দটিও করেনি। সব কিছুই চা শ্রমিকরাও এখন বুঝে গিয়েছেন। মালিকপক্ষের যখন-তখন বাগান বন্ধ করে দেওয়ার প্রবণতা রুখতে রাজ্য সরকার যে দ্রুত জমির লিজ নিয়ে একটি নতুন নীতি তৈরি করতে চলেছে এমন আভাসও এদিন দেওয়া হয়েছে তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে। চা বাগানে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ক্রেশের ব্যবস্থার পাশাপাশি শ্রম দপ্তরের তরফে আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলার প্রত্যন্ত বাগানগুলিতে বাসের ব্যবস্থা করার বার্তা দিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে চা বাগান অধ্যুষিত আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং এই ৩ আসনই গেরুয়া শিবিরের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে শাসকদল প্রভাবিত তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়ন। এরই অঙ্গ হিসেবে উত্তরবঙ্গের ৩ জেলারই চা বলয়ে গিয়ে সেখানকার বাগান স্তরের সাংগঠনিক নেতা-কর্মীদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করেছে ওই সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি। এদিন জলপাইগুড়ি জেলার নাগরাকাটা, মেটেলি ও বানারহাট এই ৩ ব্লকের বাগানগুলিকে নিয়ে এক দিনের কর্মশালার আয়োজন করা হয় নাগরাকাটার আদিবাসী সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রে। বুধবার এধরনের কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে বীরপাড়ায়। সেখানে যোগ দেবে আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি, ফালাকাটা ও মাদারিহাট ব্লকের বাগানগুলির শ্রমিক নেতারা। তৃতীয় কর্মশালাটি হবে ২২ ডিসেম্বর জলপাইগুড়ির মালবাজার, ক্রান্তি, সদর ও রাজগঞ্জ ব্লকের চা বাগানগুলিকে নিয়ে মালবাজারে। এরপর ২৭ তারিখ হবে আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রাম, আলিপুরদুয়ার এক ও আলিপুরদুয়ার দুই নম্বর ব্লকের বাগানগুলিকে নিয়ে কুমারগ্রামে। দার্জিলিং জেলার সমতলের বাগানগুলিকে নিয়ে হবে আগামী ২৮ ডিসেম্বর।