বক্সিরহাট: বৈধ খাদান থেকে অবৈধ নথি দিয়ে বালি-পাথর পরিবহনের অভিযোগ উঠল সরকারি অনুমোদিত খাদান মালিকের বিরুদ্ধে। এদিকে অবৈধ নথি দিয়ে বালি-পাথর পরিবহনের অভিযোগে চালকদের জরিমানা করছে প্রশাসন। ফলে সরকারি অনুমোদিত বালি-পাথরের খাদান থেকে অবৈধভাবে ভরাট পরিবহনের নথি দেওয়ার অভিযোগ তুলে রবিবার বক্সিরহাট-কামাখ্যাগুড়ি সংযোগকারী রাস্তা অবরুদ্ধ করে রাখলেন লরিচালকরা। জরিমানার টাকা ফেরতের দাবিতে খাদানের ম্যানেজার, কর্মচারীদের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন লরিচালক, খালাসিরা। ঘটনাটি ঘটেছে তুফানগঞ্জ-২ ব্লকের মহিষকুচি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের টাকোয়ামারি এলাকায়। উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় বক্সিরহাট থানার পুলিশ।
ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর সূত্রে খবর, মহিষকুচি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়ডাক নদী থেকে বালি-পাথর তোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ১২ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে পাঁচ বছরে জন্য সেই লিজ পেয়েছিলেন কৃষ্ণচন্দ্র দে নামে আলিপুরদুয়ারের এক ব্যবসায়ী। অপরদিকে, তুফানগঞ্জের ধলপল এলাকার তোর্সা নদী সংলগ্ন ভরাটের লিজ হোল্ডার সেই কৃষ্ণচন্দ্র দে।
সরকারি নির্দেশিকায়, রায়ডাক নদী থেকে বালি-পাথর তোলার অনুমতি মিললেও বছরে ১৩ লক্ষ সেফটি বালি-পাথর বিক্রয় করতে পারবেন ওই খাদান ব্যবসায়ী। পাঁচ বছরে সেই পরিমাণ ৬৫ লক্ষ সেফটি। তবে বছর শেষ না হতেই ইতিপূর্বেই ১৩ লক্ষ সেফটি বালি-পাথর বিক্রি করে ফেলেছেন ওই ব্যবসায়ী। ফলে রায়ডাক নদীর বালি-পাথর তুলে সেগুলি বিক্রির সময় লরিচালকদের সেই তোর্সা নদীর ভরাট পরিবহনের নথি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
লরি চালকদের অভিযোগ, নদী থেকে বালি-পাথর তুলে টাকোয়ামারি বাজার সংলগ্ন সেই বৈধ খাদানের কার্যালয় থেকে ১৭ টাকা প্রতি সেফটি দরে চালান নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন তারা। তবে গন্তব্যে পৌঁছোনোর আগেই ভুয়ো নথি দাবি করে মোটা অংকের টাকা জরিমানা করছে মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর, ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিকরা। পরে তারা জানতে পারেন, নদী থেকে বালি-পাথর তোলা হলেও তাঁদের পাশের জেলার ভরাটের নথি দেওয়া হয়। তাই জরিমানা করছে প্রশাসন। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন লরিচালক, খালাসীরা। এদিন টাকোয়ামারি বৈধ খাদানের কার্যালয় সংলগ্ন বক্সিরহাট-কামাখ্যাগুড়ি সংযোগকারী রাজ্য সড়কের উপর লরি দাঁড় করিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন লরিচালক, খালাসীরা। প্রায় ৬ ঘণ্টা রাস্তা অবরুদ্ধ থাকে। এদিকে খাদান মালিকের থেকে জরিমানার টাকার দাবিতে ম্যানেজার সহ কর্মচারীদের কার্যালয়ে তালা বন্ধ করে রেখে দফায় দফায় চলে বিক্ষোভ। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
যদিও এ ব্যাপারে খাদান মালিক কৃষ্ণচন্দ্র দে’র সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও ফোন না ধরায় তাঁর বক্তব্য মেলেনি।