উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ ‘‘আমি কি চোর? কেন এই ভাবে আমাকে আর আমার পরিবারকে হেনস্থা করা হবে?’’ তদন্ত চালিয়ে বাড়ি থেকে সিবিআই বেরিয়ে যেতেই সাংবাদিকদের সামনে এই ভাষাতেই ক্ষোভ ব্যক্ত করলেন রাজ্যের পুর ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সিবিআই তল্লাশির পর স্ত্রী এবং কন্যাকে পাশে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন ফিরহাদ হাকিম। সাংবাদিকদের সামনে তিনি নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত বলে দাবি করেন। বিজেপির কাছে মাথা নত না করাতেই বারবার হেনস্থা করা হচ্ছে।
রবিবার সকাল সাড়ে আটটায় রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের চেতলার বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালিয়ে সিবিআই আধিকারিকেরা ফিরহাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। এই প্রসঙ্গে ফিরহাদের মেয়ে প্রিয়দর্শিনী হাকিম বলেছিলেন, ‘‘সিবিআইকে লেলিয়ে দিয়ে আমাদের উপর বারবার মানসিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে।’’ এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন স্ত্রী রুবি হাকিম ও ফিরহাদ। ছিলেন মেয়ে প্রিয়দর্শিনীও। ফিরহাদ বলেন, ‘‘এত বছর ধরে এই চেতলার মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে আসছেন। এঁরা আমাকে কাউন্সিলর বানিয়েছেন। পরে মানুষ আমাকে বিধায়ক করেছেন। আজ পর্যন্ত এঁরা কেউ বলতে পারবেন না। আমি কোনও দুর্নীতি করেছি। যদি কিছু করে থাকি, তবে মানুষের সেবা করেছি। তার পরেও আমাকে এ ভাবে হেনস্থা করা হবে? কেন? আমি কি চোর? বিজেপির দিলীপ ঘোষ এবং সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী এবং প্রাক্তন মেয়র বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এঁরা সবাই আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে চেনেন। এঁরা বলুন তো আমি চোর? সুজন বাবু, বিকাশ বাবু, দিলীপ ঘোষ বলুন আমি চোর?’’
এরপর ফিরহাদের প্রশ্ন, ‘‘বিজেপির কাছে মাথা নত করব না বলেই কি, এ ভাবে আমার সম্মানহানি করা হচ্ছে? সমাজ সেবা করেছি। এটাই কি আমার অপরাধ। তা না হলে এ ভাবে হেনস্থা করা হবে কেন? আমার ভাইয়ের আজ শ্রাদ্ধ ছিল। সেখানেও যেতে দেওয়া হল না আমাকে। বলুন তো, পুর নিয়োগের কোনও ফাইল কি পুর মন্ত্রীর কাছে আসে।’’
এদিন ফিরহাদ বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন, ‘‘বিজেপি একটা অসভ্য, বর্বর দল। এদের কাছে মাথা নত করব না বলে এ ভাবে আমার পরিবারকে অপমান করা হচ্ছে। বিজেপিকে বলব, আমাকে জেলে রাখুন কিন্তু এ ভাবে অপমান করবেন না।’’ বিজেপিকে ছিছিক্কার করে ফিরহাদ বলেন, ‘‘ছি ছি ছো! এরা সম্মানহানি করে! বামফ্রন্ট আমলেও মার খেয়েছি। মামলা হয়েছে আমার বিরুদ্ধে। কিন্তু এ ভাবে হেনস্থা করা হয়নি। আমি জেলে গেছি। হাসপাতালে গিয়ে শুয়ে থাকিনি। ২৫ বছরের কাউন্সিলর থেকেছি আমি। দুর্নীতির সঙ্গে কখনও হাত মেলাইনি। কেউ যদি বলে আমাকে টাকা দিয়েছে, তবে সব ছেড়ে ইস্তফা দেব।’’
এদিন তিনি নারদা প্রসঙ্গে বলেন, একটি মামলাতেই আমি অভিযুক্ত। কিন্তু সেই মামলার বিচার হবে না। রাজীব গান্ধীর যেমন মৃত্যুর পর ক্লিনচিট পেয়েছিলেন, ওই মামলাতেও তাই হবে। আমি মারা যাওয়ার পর হয়তো ক্লিনচিট পাব।’’ শুভেন্দু অধিকারীর প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘‘নারদা মামলায় শুভেন্দুও তো অভিযুক্ত। কই ওকে তো ডাকা হল না?’’
রবিবার তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজ্যের দুই বিরোধী দলের নেতাদের কথাও টেনে এনেছেন ফিরহাদ। বিজেপির দিলীপ ঘোষ এবং সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী এবং প্রাক্তন মেয়র বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের নাম করে ফিরহাদ বলেন, ‘‘এঁরা সবাই আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে চেনেন। এঁরা বলুন তো আমি চোর? সুজন বাবু, বিকাশ বাবু, দিলীপ ঘোষ বলুন আমি চোর?’’