ইম্ফল: কয়েকদিন আগেই মণিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছিল সব মহলে। ফের একবার নারকীয় ঘটনা ঘটল সেখানে। মণিপুরের বিষ্ণুপুর জেলায় যুবকের কাটা মুণ্ডু ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠল। ঘটনার সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বাঁশের তৈরি বেড়ার গায়ে ঝুলিয়ে রাখা হল মুণ্ডু! এ কোনও রহস্য-রোমাঞ্চ কিংবা ভৌতিক গল্পের শুরু মনে হলেও আসলে তা স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর ভারতের এক চূড়ান্ত লজ্জাজনক অধ্যায়, যা বিশ্বের দরবারে ক্রমশ নীচু করে দিচ্ছে দেশের মাথা।
সূত্রের খবর, মাথাটি যাঁর, তাঁর নাম ডেভিড থিয়েক। তিনি কুকি সম্প্রদায়ভুক্ত। এই ঘটনাটি ঘটেছিল গত ২ জুলাই। সেদিন কুকি এবং মেতেইদের মধ্যে লড়াইয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৩ জন। তাঁদের একজন ছিলেন ডেভিড। ডেভিডের দেহ থেকে মাথাটি কেটে ঝুলিয়ে রাখা হয় একটি বাড়ির সামনে বেড়ায়। নেটমাধ্যমে সেই ভিডিও দেখে শিউরে উঠছেন জনগণ। যদিও এই ঘটনায় প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা তা এখনও জানা যায়নি।
গত বুধবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল মণিপুরের একটি ভিডিও। সেই ভিডিওতে দুই কুকি সম্প্রদায়ভুক্ত মহিলাকে বিবস্ত্র করে রাস্তা দিয়ে হাঁটাতে দেখা গিয়েছিল জনতাকে। পরে জানা যায়, গণধর্ষণ করা হয়েছে দু’জনকে। এক নিগৃহীতার বাবা এবং ভাইকে খুন করা হয় তাঁর চোখের সামনে। জানা যায়, ঘটনাটি ছিল মে মাসের। সেই ঘটনা সামনে আসতেই শিউরে উঠেছিল গোটা দেশের মানুষ। অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছিল দেশ। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের পদত্যাগের দাবিও তুলেছিল বিরোধীরা। এই ঘটনায় মণিপুর প্রসঙ্গে নীরবতা ভেঙে মুখ খুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ঘটনাকে লজ্জাজনক বলে আখ্যা দেন তিনি। এরপর গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ঘটনার মূল অভিযুক্ত মেতেই সম্প্রদায়ভুক্ত যুবককে। ওই ঘটনায় পরে আরও ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ক্ষুব্ধ মহিলারা মূল অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। এমনকি, এই ইস্যুতে বিক্ষোভের জেরে শুক্রবার বেলা বারোটা পর্যন্ত মুলতুবি হয়ে যায় সংসদের বাদল অধিবেশন। অচলাবস্থা তৈরি হয় রাজ্যসভাতেও। এবার সেই মণিপুরেই ফের ভয়ংকর ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হল।