উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ বছরের শেষেই শান্তি চুক্তি অসমের জঙ্গি সংগঠন আলফার সঙ্গে। শুক্রবার ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অফ অসম ও অসম রাজ্যের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ত্রিপাক্ষিক শান্তি চুক্তি করল কেন্দ্র। দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শা’র উপস্থিতিতে এই চুক্তি হয়েছে বলে খবর। শান্তি চুক্তিতে সই করেন আলফার চেয়ারপার্সন অরবিন্দ রাজখাওয়া, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। এই দিনটিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শা সোনালি দিন বলে উল্লেখ করেছেন।
১৯৭৯ সালে অসমে সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠন আলফা গ্রুপের জন্ম দিয়েছিলেন আপার অসমের ২০জন যুবক। তাঁদের দাবি ছিল স্বাধীন অসম রাষ্ট্র। এই দাবিতে একেবারে সশস্ত্র যুদ্ধে নেমে পড়েছিলেন তারা। পুরো অসম জুড়ে সংগঠনটি ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করতে থাকে। নাশকতা থেকে অপহরণ, হত্যা ছিল এদের নিত্যদিনের কাজ। আলফার নাশকতামূলক কার্যকলাপে গত ৪৪ বছরে অসমে কমপক্ষে ১০হাজার লোকের প্রাণ গিয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে প্রাণ গিয়েছে বহু আলফা জঙ্গিদেরও।
কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর অসমে উগ্রপন্থামূলক কাজকর্মকে বন্ধ করার জন্য সবরকম চেষ্টা শুরু করে কেন্দ্র। এর আগেও আলফারা একাধিকবার আলোচনায় বসতে চেয়েছেন। অবশেষে উগ্রপন্থা ছেড়ে শান্তির পথ বেছে নিল আলফারা। তাঁদের সঙ্গে শুক্রবারই দিল্লিতে অমিত শা এবং অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার উপস্থিতিতে সম্পন্ন হল আলফার সঙ্গে শান্তি চুক্তি। এদিন অমিত শা জানিয়েছেন, “আলফার সঙ্গে এই চুক্তির ফলে অসমের জন্য বিরাট প্যাকেজ দেওয়া হবে। এই চুক্তি একেবারে ঠিকঠাক করে প্রয়োগ করা হবে। আজকের দিনটা আমার কাছে খুব আনন্দের দিন। অসমের ভবিষ্যতের পক্ষে এটা একটা স্বর্ণালী দিন। দীর্ঘ সময় ধরে হিংসা দেখেছে অসম। তবে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই দিল্লি ও উত্তরপূর্বের মধ্যে শূন্যস্থানকে দূর করার ব্যাপারে সবরকম চেষ্টা করা হয়েছে। গত পাঁচ বছরে ৯টি শান্তি ও সীমান্ত সংক্রান্ত চুক্তি হয়েছে। এর জেরেই উত্তর পূর্বের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়েছে।”
এদিনের এই শান্তি চুক্তিকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। এদিন তিনি বলেন, “আলফার সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হওয়ায় অসমে শান্তি ও উন্নয়নের সূচনা হবে। অসমের জন্য কেন্দ্রের কাছ থেকে দেড় লক্ষ কোটি টাকা উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ আসবে। আদিবাসীদের সামাজিক উন্নয়ন, সকলের ভূমির অধিকার, অসমের জনগণকে রাজনৈতিক নিরাপত্তা ও সাংবিধানিক সুরক্ষা দেবে। দাবি করা হচ্ছে, এই শান্তিচুক্তির ফলে সমাজের মুল স্রোতে ফিরেছেন আলফার ৮২০ জন জঙ্গি, এবং ৭২৬ জন্য ক্যাডার।