উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ লালবাজারের কন্ট্রোল রুমে বেজে উঠল ফোন। পুলিশকর্মী ফোন ধরতেই অপর প্রান্ত থেকে বলছেন ‘আমি আমার স্ত্রীকে ছুরি মেরেছি। প্রচুর রক্ত বের হচ্ছে। আপনারা তাড়াতাড়ি আসুন।’ সেই ব্যক্তি জানিয়ে দেন নিজের নাম পরিচয় ও ঠিকানা। প্রথমে পুলিশকর্মী ভেবেছিলেন ভুয়ো ফোন কল। ফোন আসার ৭ মিনিটের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিশ। তাঁরা নিজেদের চোখেই দেখলেন রক্তারক্তি কাণ্ড। এক মহিলা রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। পাশে দাঁড়িয়ে কাদছে মহিলার দুই সন্তান। এরপরই পুলিশ জখম মহিলাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় হাসপাতালে। আটক করা হয়েছে স্বামীকে।
জানা গিয়েছে, সামান্য জলের বোতল রাখা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বচসা। বচসা চরম পর্যায়ে পৌঁছালে আচমকাই স্ত্রীকে পিঠে ছুরি মারলেন স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতার সিঁথি এলাকায়। অভিযুক্ত স্বামী কাশীপুর গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরির স্থায়ী কর্মী। বহু বছর ধরেই একটি সরকারি আবাসনে বসবাস করছেন ওই দম্পতি। এঁরা ওডিশার বাসিন্দা। এঁদের মধ্যে সেদিন অশান্তি শুরু হয়। তা থেকেই এই কাণ্ড ঘটে যায়। প্রায় আধঘণ্টা ঝগড়া চলেছিল। বচসার সময়ই টেবিলের উপরে থাকা ফল কাটার ছুরিটি হাতে তুলে নিয়ে স্বামী সেটি চালিয়ে দেন স্ত্রীর পিঠে। মারাত্মক জখম হন তিনি। মায়ের এমন অবস্থা দেখে কাঁদতে থাকে দুই শিশু। এই ঘটনার পরই ১০০ নম্বরে ডায়াল করে নিজের স্ত্রীকে ছুরি মারার ঘটনা জানান মহিলার স্বামী। এই ফোনের পরই নড়েচড়ে বসে লালবাজার। মাত্র সাত মিনিটে সিঁথির ওই বাড়িতে পৌঁছয় কলকাতা পুলিশের টিম। আর দেখতে পান বিছানার উপর পড়ে রয়েছে রক্তাক্ত গৃহবধূ। আর রক্তমাখা ছুরির পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর স্বামী। ঘটনাস্থল থেকে জখম বধূকে উদ্ধার করে আর জি কর হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। আটক করা হয় বধূর স্বামীকে। ওই ব্যক্তি ফোন করে পুলিশকে যা বলেছেন তাতে সিঁথি এলাকায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।
তবে পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার রাত পর্যন্ত স্বামীকে আটক রাখলেও তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। কারণ আহত গৃহবধূ বা তাঁর পরিবারের কোনও সদস্য থানায় অভিযোগ দায়ের করেনি। পুলিশের পক্ষ থেকে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা হয়নি। তাই আহত ও অভিযুক্তের নাম গোপন রাখা হয়েছে। এখন পুলিশ কোন পথে হাঁটে সেটাই দেখার।