আলিপুরদুয়ার: ভারতের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির সুনাম যে বিদেশের মাটিতে ছড়িয়ে সেটা নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। তাই তো সেই সংস্কৃতির পরিচয় পেতে প্রতি বছরই কয়েক লক্ষ বিদেশি পর্যটক এ দেশে আসেন। তবে হেঁটে ভারতের রাস্তায় ঘুরে কতজন মাটির সঙ্গে মিশে এই দেশকে চেনার চেষ্টা করেন! হয়তো সেই সংখ্যাটা খুবই কম। এই কমের তালিকায় এবার ঠাঁই হতে পারে সাবেস্টিয়ান হাওয়ের। এই অস্ট্রেলিয়ান তরুণ হেঁটে ভারতভ্রমণে বেরিয়েছেন মাস ছয়েক আগে। বৃহস্পতিবার সাবেস্টিয়ান এসে পৌঁছান আলিপুরদুয়ার শহরে। ওঁর গন্তব্য অসমের তিনসুকিয়া।
মুম্বই থেকে ভারতভ্রমণ শুরু করেছেন ওই তরুণ। এদিন সকালে ফালাকাটা থেকে হেঁটে যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি। আলিপুরদুয়ার-ফালাকাটা জাতীয় সড়ক ধরে জেলা শহরে আসেন। যাত্রাপথে রাস্তায় বিভিন্ন লোকের সঙ্গে কথাও বলতে দেখা যায় তাঁকে। এদিন আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের সোনাপুর চৌপথিতে কথা হয় ওই তরুণের সঙ্গে। অনেকেই কোনও জায়গায় ঘুরতে গেলে গাড়িতে করে ঘুরে বেড়ান, তাহলে আপনি হেঁটে কেন ঘুরতে এসেছেন? প্রশ্নটা করায় একটু হেসে তাঁর উত্তর, ‘গাড়িতে গেলে তো আপনার সঙ্গেই আলাপ হত না।’ তারপর আবার সংযোজন, আসলে আমি ভারতীয় সংস্কৃতি, পরিবেশ, খাবার, মানুষের কাছ থেকে চেনার চেষ্টা করছি। সেজন্য হেঁটে এই যাত্রা। গাড়িতে ঘুরলে শিকড়ের সঙ্গে পরিচয় হত না।’
সাবেস্টিয়ান দিনেরবেলায় হাঁটছেন। সঙ্গে রয়েছে একটি ট্রলি। সেখানেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, পোশাক, ল্যাপটপ আছে। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে সেখানকার ভিডিও ইউটিউব চ্যানেল এবং ইনস্টাগ্রামেও আপলোড করা ওঁর হবি। পেশায় অস্ট্রেলিয়ার একটি আইটি কোম্পানিতে কর্মরত ওই তরুণ ভারতে আসার আগে আরও ১৩টি দেশে ভ্রমণ করেছেন। বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় হতে সেখানেও এভাবেই হেঁটেছেন তিনি। মূলত দিনেরবেলায় হাঁটছেন। রাতে কোনও হোটেল বা লজে রাত কাটাচ্ছেন। কোথাও রাত কাটাতে গিয়ে বা খাবার খেতে গিয়ে কি সমস্যা হচ্ছে? তরুণের কথায়, ভারতে এসে দেখছি খাবার অনেক সস্তা। এটা সুবিধা হয়েছে। বেশি খরচ হচ্ছে হোটেলে রাতে থাকতে গিয়ে। মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে তিনসুকিয়া পৌঁছানোর লক্ষ্য ওঁর। মার্চের শেষে দেশে ফেরার টিকিট করা আছে আগে থেকেই। প্রতিদিন গড়ে ৩০-৪০ কিমি হাঁটছেন বলে জানা গেল ওঁর কাছে।