নয়াদিল্লি: ইতিহাসের পর এবার রাষ্ট্রবিজ্ঞানে কোপ। দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের নতুন পাঠ্যসূচি থেকে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংস সংক্রান্ত তিনটি অংশ এনসিইআরটি বাদ দিল। এছাড়া পাঠ্যসূচিতে ১৯৮৯ সালের লোকসভা ভোটের পর থেকে কংগ্রেসি ক্ষমতার পতনের ঘটনাবলিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সিবিএসই পাঠ্যক্রম নিয়ামক সংস্থা পাঠ্যবইকে সময়োপযোগী করার যুক্তিতে ওই তিনটি অংশ বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই নতুন সিলেবাস কার্যকর হবে। সিবিএসই’র দ্বাদশের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বইয়ের অষ্টম অধ্যায়ে স্বাধীনতা পরবর্তী রাজনৈতিক ঘটনাবলির মধ্যে অযোধ্যার মন্দির-মসজিদ বিবাদ প্রসঙ্গ আছে। নতুন বয়ানে রাম জন্মভূমি আন্দোলনকে মহিমামণ্ডিত করা হয়েছে। কিন্তু সন্তর্পণে বাবরি মসজিদ ভাঙার উল্লেখ বাদ দেওয়া হয়েছে। আরও যে চারটি বিষয় আট নম্বর অধ্যায়ে রয়েছে সেগুলি হল, ১৯৮৯-এর পর থেকে কংগ্রেসের দুর্বল হয়ে যাওয়া, ১৯৯০-এ মণ্ডল কমিশন চালু, ১৯৯১-এ আর্থিক সংস্কারের সূচনা এবং ওই বছরই শ্রীলঙ্কার এলটিটিই জঙ্গিদের হাতে রাজীব গান্ধির হত্যাকাণ্ড। এই অংশগুলি নতুন করে লেখা হয়েছে।
পাঠ্যবইয়ে চার পাতাজুড়ে অযোধ্যা প্রসঙ্গ রয়েছে। তাতে সমসাময়িক ভারতীয় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ১৯৮৬ সালে মসজিদের তালা খুলে দেওয়া, হিন্দু ও মুসলিমদের জমায়েত, উত্তরপ্রদেশে বিজেপি সরকারের পতন, দেশব্যাপী দাঙ্গা এবং ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে বিতর্ক বর্ণিত হয়েছে। ঘটনাপরম্পরা এবং বক্তব্য এমনভাবে রাখা হয়েছে যাতে অযোধ্যা ইস্যুটি বিজেপি ও হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনীতির পক্ষে যায়। সাম্প্রদায়িক হিংসার জন্য দু’পক্ষকেই দায়ী করা হয়েছে। বিস্ময়ের ব্যাপার বয়ানে খুঁটিনাটি অনেক তথ্য থাকলেও কোথাও বাবরি মসজিদ ধ্বংসের কোনও উল্লেখ নেই।
এনসিইআরটি’র নতুন পাঠ্যসূচিতে সপ্তম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সমাজবিদ্যা ও ইতিহাস বইয়েও বেশ কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বইয়ে যেভাবে স্বীকৃত ইতিহাসের বয়ান বদলে দেওয়া হয়েছে, ততটা পরিবর্তন নীচু শ্রেণির বইয়ে হয়নি।