নাগরাকাটা: লাল ফিতের ফাঁসে ৪ বছর ধরে আটকে আছে ৩ কিলোমিটার রাস্তার কাজ (Road Construction)। এর ফল ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। চলাচলের অযোগ্য ওই একমাত্র পথ দিয়ে প্রাণ হাতে করে যাতায়াত করতে হচ্ছে ৬ হাজার বাসিন্দাকে। ঢুকতে চায় না প্রসূতিদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার অ্যাম্বুল্যান্সও। স্কুলবাস চলাচলও বন্ধ হওয়ার জোগাড় হয়েছে। রাস্তার এমন বেহাল দশাই এবার ভুটান সীমান্তের জিতি চা বাগানের (Jiti Tea Garden) ভোটের (Lok Sabha Election 2024) মূল ইস্যু। নেতাদের বিষয়টি নিয়ে কোনও হেলদোল নেই বলে শ্রমিকদের অভিযোগ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বস্তিক প্রকল্পের মাধ্যমে বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (বিআরও) ২০১৯ সালে জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) নাগরাকাটার (Nagrakata) মহাদেব মোড় থেকে জিতি চা বাগানের ভুটান সীমান্ত পর্যন্ত মোট ১৩ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করে। এরপর ১০ কিলোমিটার ঝাঁ চকচকে রাস্তা নির্মাণের কাজ শেষও হয়ে যায়। শুধু আটকে আছে থালঝোড়া মোড়ের ঠিক জিতি চা বাগানে ঢোকার মুখ থেকে সীমান্ত পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার অংশ। বিআরও কাজ শুরু করার আগে থেকেই অবশ্য রাস্তাটি বেহাল হয়ে ছিল। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা এখন ভয়ংকর আকার ধারণ করেছে। বিআরও সূত্র জানাচ্ছে, জমিজট না কাটার কারণেই ওইটুকু অংশের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় ওই সংস্থার সংশ্লিষ্ট সহকারী ইঞ্জিনিয়ার হরিবল্লভ ভাট বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব এখনও অনুমোদিত হয়নি। বিষয়টি নিয়ে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের শীর্ষস্তরে বারবার যোগাযাগ করা হচ্ছে। অনুমতি মিলে গেলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। আমরাও চাইছি দ্রুত কাজটি শেষ করে ফেলতে।’
জিতি চা বাগানে যাওয়ার ওই রাস্তাটি আন্তর্জাতিক ও প্রতিরক্ষার দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। ভুটানের সঙ্গে সংযোগকারী রাস্তা দিয়ে প্রতিবেশী দেশের অজস্র গাড়ি চলাচল করে। জিতিতে কয়েক মাস আগে একটি শুল্ক কেন্দ্র চালু হওয়ার পর বর্হিবাণিজ্যের ক্ষেত্রে ওই রাস্তার গুরুত্ব এখন অপরিসীম।
বাগানের শ্রমিক কল্যাণ আধিকারিক পার্থ ভাদুড়ি বলেন, ‘রাস্তার মারাত্মক পরিস্থিতির কারণে বাগানকে নানাভাবে ক্ষতির শিকার হতে হচ্ছে। বহু চিঠি চালাচালি সংশ্লিষ্ট সমস্ত দপ্তরের সঙ্গে করা হয়েছে। লাল ফিতের ফাঁস বলতে যা বোঝায় এক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে বলে আমাদের ধারণা। বাগানের তরফে যে এনওসি দেওয়ার কথা তা বহু আগেই প্রশাসনকে দিয়ে রাখা হয়েছে। এদিকে ঝুঁকি নিয়ে এখন এই রাস্তা দিয়ে স্কুলগাড়ি আর চলাচল করতে চায় না। নিলাম কেন্দ্রে চা পাঠানোর গাড়ি দু’দিন পর পরই বিকল হয়ে পড়ছে। গোটা বাগান ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যে কাটাচ্ছে।’