উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে আগেই ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বাকিবুর রহমান। বাকিবুরের গ্রেপ্তারের পর জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দাবি করেছিলেন বাকিবুরের সঙ্গে তাঁর কোনও ঘনিষ্ঠতা নেই। যদিও ইডির জেরায় রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী স্বীকার করেছেন, তাঁর স্ত্রীকে বিদেশযাত্রার টিকিট কেটে দিয়েছিলেন বাকিবুর। শুক্রবার ব্যাংকশাল কোর্টে এমনটাই দাবি করেছে ইডির আইনজীবী। এই তথ্যকে সামনে রেখে রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে গ্রেপ্তার ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানের যোগ প্রমাণে মরিয়া ইডি।
রেশন দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার ভোরে ইডি আধিকারিকরা হান দিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সল্টলেকের বাড়িতে। টানা ২০ ঘন্টার ওপরে জিজ্ঞাসাবাদের পর তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ এনে জ্যোতিপ্রিয়কে গ্রেপ্তার করে সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় ইডি। এদিনই তাঁকে তোলা হয় ব্যাংকশাল কোর্টে। জ্যোতিপ্রিয়কে আদালতে পেশের পর একাধিক তথ্য পেশ করেন ইডির আইনজীবী ফিরোজ এদুলজি। ইডির চাঞ্চল্যকর দাবি, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পরিবারের বিদেশযাত্রার খরচ দিয়েছিলেন গ্রেপ্তার বাকিবুর রহমান। বাকিবুরের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বিদেশযাত্রা সংক্রান্ত নথি উদ্ধার হয়েছে বলে জানান তিনি। টিকিট যে কাটা হয়েছিল তা মেনে নেন জ্যোতিপ্রিয়।
এদিন আদালতে ইডির আইনজীবী এদুলজি দাবি করেন, একসঙ্গে মরিসাস ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের পরিকল্পনা করেছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের স্ত্রী মণিদীপা মল্লিক ও বাকিবুরের স্ত্রী। সেই মতো ট্রাভেল এজেন্টের মাধ্যমে টিকিটও কাটা হয় দুজনের। নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টিকিটও কাটেন বাকিবুর রহমান। সেই নথি রয়েছে ইডির হাতে। এমনকী ট্রাভেল এজেন্টের সঙ্গে বাকিবুরের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটও তাদের কাছে রয়েছে বলে দাবি ইডির। এই প্রসঙ্গ ওঠার পর পালটা জ্যোতিপ্রিয় বলেন, “টিকিট কাটা হয়েছিল ঠিকই। তবে পরে তা বাতিল করে দেওয়া হয়। বিমানের টিকিট কাটা এই দেশে অপরাধ না কি?”
প্রসঙ্গত, বাকিবুরের গ্রেপ্তারির পর জ্যোতিপ্রিয় দাবি করেছিলেন, তাঁর সঙ্গে বাকিবুরের কোনও ঘনিষ্ঠতা নেই। অথচ ইডি সূত্রে খবর, ২০১৭ সাল পর্যন্ত অন্তত ৩টি ভুয়ো সংস্থার বোর্ড অফ ডিরেক্টর্সে যৌথভাবে ছিলেন জ্যোতিপ্রিয় ও বাকিবুরের পরিবারের সদস্যরা। এমনকী মন্ত্রী নিজের বাড়ির রাঁধুনি ও পরিচারকের নামেও কোম্পানি খুলে রেখেছিলেন। এই কোম্পানিগুলির মাধ্যমে সাদা করা হয়েছে ১২ কোটি কালো টাকা। জ্যোতিপ্রিয় গ্রেপ্তারের পর থেকে তাঁর নামে বেনামী সম্পত্তির হদিস চালিয়ে যাচ্ছেন ইডির গোয়েন্দারা।