নয়াদিল্লি: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল’ই কি সে দেশের ভাবি প্রধানমন্ত্রী? শনিবার এই জল্পনাই ছড়িয়ে পড়ল নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানে সুদৃশ্য ভারত মণ্ডপম সেন্টারের অলিতে গলিতে। জল্পনা শুরু হয়েছে, নিজের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে নয়াদিল্লির জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনেই তাঁর উত্তরসূরীর অভিষেক ঘটালেন মুজিব কন্যা।
নয়াদিল্লির ভারত মণ্ডপম সেন্টারে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন ঘিরে বসেছে চাঁদের হাট। দেশ বিদেশের বিভিন্ন শীর্ষ প্রতিনিধি, রাষ্ট্রনায়কদের পাশাপাশি উপস্থিত হয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। সঙ্গে তাঁর সর্বক্ষণের ছায়াসঙ্গী, কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। শুক্রবার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মঞ্চেও হাজির ছিলেন সায়মা। জানা গিয়েছে, স্বয়ং মোদি তাঁর ‘অটিজম’ নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরের কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
শনিবারে, মায়ের সঙ্গেই ভারত মণ্ডপম সেন্টারে পা রাখেন সায়মা। গোটা অধিবেশন মায়ের পিছনে তাঁকে বসে থাকতে দেখা যায়, মনোযোগ সহকারে সব বক্তব্য শোনেন, নোট নেন, এমনকি হাসিনার দু দফা ভাষণের খসড়াও দেখে দেন তিনিই। অন্যদিকে, স্বয়ং শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর মেয়ের ‘রসায়ন’ যে কোন স্তরের তা টের পাওয়া গিয়েছে প্রতিটি পদক্ষেপে, শরীরী ভাষ্যের মাধ্যমে। মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে মেয়ে সায়মাকে সঙ্গে নিয়ে তিনি দেখা করেন প্রায় সমস্ত দেশের শীর্ষ প্রতিনিধি, রাষ্ট্রনায়কদের সঙ্গে। আলাপ করিয়ে দেন কন্যার সঙ্গে। এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে একত্রে সেলফিও তোলেন তাঁরা, পাশে ছিলেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও। বাইডেনও সায়মার কাজ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তর প্রশাসনিক দায়িত্বের জন্য তাঁকে সাধুবাদও দেন বলে জানা যায়। এমনকি ‘হু’-র চিফ টেড্রস এ ঘেব্রেইসাসের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেন তাঁরা।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, জি-২০ এর মঞ্চেই কি চুপিসারে বাংলাদেশের ভাবি প্রধানমন্ত্রীর আত্মপ্রকাশ ঘটালেন হাসিনা? সমস্ত রাষ্ট্রনায়কদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় কি নেহাৎ সৌজন্যমূলক নাকি নেপথ্যে কোনও ইঙ্গিতবাহী বার্তা দিলেন হাসিনা? বস্তুত, বছর শেষে বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন। তার আগে হাসিনার এই দুদিনের দিল্লি সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনীতিবিদরা। এই আবহে নয়াদিল্লিকে পাশে পেতে এবং নির্বাচনি বৈতরণী পার হতে সম্ভাব্য সবরকম পন্থাই খোলা রাখছেন পোড়খাওয়া রাজনীতিক, মুজিব কন্যা শেখ হাসিনা। সে ক্ষেত্রে আগামী দিনে সুযোগ্য কন্যা সায়মার হাতে যদি ঢাকার রাজপাট তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি, তাতে কিন্তু আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ।