চাঁচল: সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে অন্তঃসত্ত্বা দিদিকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতা ভাইয়ের বিরুদ্ধে। দিদি নিজেও তৃণমূলের নেত্রী। অন্যদিকে, নিজের ঠাকুরদাকে মারধরের পাল্টা অভিযোগ উঠেছে ওই নেত্রীর বিরুদ্ধে। পারিবারিক সেই বিবাদের জল গড়িয়েছে থানা পর্যন্ত। উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। চাঁচল ১ নম্বর ব্লকের চাঁচল সদর এলাকায় দক্ষিণপাড়ার ঘটনা। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়েছে এলাকায়। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, রাজনৈতিক এবং ব্যবসায়িক কারণে দক্ষিণপাড়ার পাণ্ডে বাড়ির পরিচিতি রয়েছে। ওই পরিবারের কর্তা বিধভূষণ পান্ডে(৮৫)। ওঁর দুই ছেলে খোকন পান্ডে এবং দিলীপ পান্ডে মারা গিয়েছেন। খোকনের ছেলে অমিতেশ ও অভিষেক পান্ডে এবং দিলীপের মেয়ে চাঁদনি পান্ডে উপাধ্যায়ের মধ্যেই মূলত ঝামেলা। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সাল থেকে সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ চলছে দুই শরিকের মধ্যে।
চাঁদনি এবং অমিতেশ দুজনেই শাসকদলের নেতা-নেত্রী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। চাঁদনি দেবী এর আগে তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের চাঁচল অঞ্চল সভানেত্রী ছিলেন। এখনও তিনি সক্রিয়ভাবে শাসকদলের সঙ্গে যুক্ত। সম্প্রতি ব্লক তৃণমূলের ধর্না মঞ্চেও তাঁকে দেখা গিয়েছে। অন্যদিকে, অমিতেশ তৃণমূলের চাঁচল ১ ব্লক সহ সভাপতি এবং চাঁচল গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। এলাকায় দাপুটে নেতা হিসেবে পরিচিত।
অমিতেশ এবং অভিষেক পান্ডের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলেছেন চাঁদনি। তাঁর অভিযোগ, তাঁর স্বামী কেন্দ্রীয় বাহিনীতে কাজ করেন। সেই কারণে চাঁদনি মায়ের সঙ্গে পৈতৃক ভিটেতে থাকেন। বর্তমানে তিনি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে দুই কাকাতো ভাই অমিতেশ ও অভিষেক তাঁকে মারধর করেছেন। এমনকি তাঁরা তার পেটে লাথিও মারে বলে অভিযোগ চাঁদনি দেবীর। এই ঘটনায় চাঁচল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
যদিও অমিতেশবাবু অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, চাঁদনি এবং তাঁর মা মাঝে মাঝেই বিধভূষণ পান্ডের উপর অত্যাচার করেন। জোর করে সম্পত্তির দলিলে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও করেন। অভিযোগ, জুলাই মাসে চাঁদনি তাঁর ঠাকুরদাদাকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে মাথা ফাটিয়ে দেন। মাথায় এখনও সেলাই আছে। যদিও সেই সময় পারিবারিক কারণে থানায় অভিযোগ দায়ের করেননি বিধুভূষণবাবু। কিন্তু ৩১ অগাস্ট তাঁকে ফের বালিশ চাপা দিয়ে মারার চেষ্টা করেন চাঁদনি ও তাঁর মা। তারপরেই বিধুবাবু থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। চাঁচল থানার তরফে জানানো হয়েছে, দুই পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।