উত্তরবঙ্গ ব্যুরো: লোকসভা ভোটের আগে ‘ভোট করাতে পারে’ এমন ব্লক সভাপতিদের বেছে নিল তৃণমূল (TMC)। বুধবার রাতে দলের রাজ্য দপ্তর থেকে জেলাওয়াড়ি ব্লক সভাপতিদের রদবদলের পরই দলের ভেতরে চর্চা শুরু হয়েছে। রাজ্য তৃণমূল সূত্রে খবর, অর্থ, বাহুবল এবং জনসংযোগ- ভোটের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ তিন মাপকাঠিকে প্রাধান্য দিয়েই ব্লক সভাপতিদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি হয়েছে।
বিজেপির শক্ত ঘাঁটিতে হারানো জমি পুনরুদ্ধারে জলপাইগুড়ি জেলায় ধূপগুড়ি, মেটেলি, নাগরাকাটা, জলপাইগুড়ি সদর-১ এবং ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি, এই পাঁচ ব্লকে দায়িত্ব বদল করেছে তৃণমূল। ডাবগ্রামে সুধাসিংহ চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে ভোট সামলাতে চেয়ারে বসানো হয়েছে গৌতম দেবের বিশ্বস্ত দেবাশিস প্রামাণিককে। বিভিন্ন সময় নানা অভিযোগ উঠলেও বাহুবলী দেবাশিস দায়িত্ব পাওয়ায় অবাক অনেকেই। মেটেলিতে জোসেফ মুন্ডাকে সরিয়ে সৌমিতা কালিন্দীর ওপর ভরসা রেখেছে দল। ধূপগুড়িতে দীপু রায়ের জায়গায় এসেছেন মলয় রায়। সদর-১-এ তরুণ বসু বিশ্বাসের বদলে নির্মল রায় এবং নাগরাকাটায় সঞ্জয় কুজুরের পরিবর্তে প্রেম ছেত্রীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আলিপুরদুয়ারের আটটি সাংগঠনিক ব্লকের চারটিতেই (আলিপুরদুয়ার-১, আলিপুরদুয়ার-২, কালচিনি ও ফালাকাটা গ্রামীণ) নতুন মুখ এসেছেন। জেলায় সবথেকে বেশি চর্চা হচ্ছে আলিপুরদুয়ার-১-এ পীযূষকান্তি রায়কে সরিয়ে তুষারকান্তি রায়কে সভাপতি করা নিয়ে। ব্লকে পীযূষ বনাম প্রাক্তন সভাপতি মনোরঞ্জন দে’র কোন্দল কারও অজানা নয়। আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকে লুইস কুজুরকে সরিয়ে পরিতোষ বর্মনকে সভাপতি করা নিয়েও আলোচনা চলছে। কালচিনিতে বীরেন্দ্র বরা ওরাওঁয়ের বদলে অসীমকুমার লামা এবং ফালাকাটা (গ্রামীণ)-তে সুভাষচন্দ্র রায়কে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সঞ্জিত দাসকে।
কোচবিহারে তৃণমূলের ১৬টি সাংগঠনিক ব্লক। এর মধ্যে কোচবিহার-১, তুফানগঞ্জ-১ এবং মাথাভাঙ্গা-২, এই তিন ব্লকে দায়িত্ব বদলেছে। কোচবিহার ১-এ জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুমিতা বর্মনের স্বামী জ্যোতির্ময় দাসের বদলে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কালীশংকর রায়কে। তুফানগঞ্জ-১-এ মনোজ বর্মার পরিবর্তে নতুন সভাপতি হয়েছেন সিদ্ধার্থ মণ্ডল। আর মাথাভাঙ্গা-২-এ খোকন বিশ্বাসের বদলে প্রদীপরঞ্জন সরকারকে দল সামলানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, জেলার অন্যত্র বদলের প্রয়োজন নেই বলেই রিপোর্ট পাঠিয়েছিল জেলা তৃণমূল। তাতেই সিলমোহর দিয়েছে রাজ্য নেতৃত্ব।
শিলিগুড়ি মহকুমার চারটি ব্লকে একমাত্র পরিবর্তন হয়েছে খড়িবাড়িতে। সেখানে মুকুল সরকারের বদলে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কিশোরমোহন সিংহকে। ইসলামপুরে গোয়ালপোখর-১ সাংগঠনিক ব্লকে মন্ত্রী গোলাম রব্বানির ভাই গোলাম রসুলকে সরিয়ে আহমেদ রেজাকে দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে দলে আলোচনা শুরু হয়েছে।