উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ মনোনয়ন ঘিরে উত্তপ্ত ভাঙড়। বিডিও অফিসের সামনেই একের পর এক বোমার গর্জন। চলেছে ‘গুলি’ও। লাঠি, বাঁশ নিয়ে চলল বেধড়ক সংঘর্ষ। হল ইটবৃষ্টি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ছোড়া হল টিয়ার গ্যাসের সেল। চোখে পড়ল না ১৪৪ ধারার মান্যতা। নিরাপত্তা নিয়ে ফের আরও একবার প্রশ্ন চিহ্নের মুখে পড়ে গেল রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
মঙ্গলবার সকালে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির নেতৃত্বে ভাঙড়ে মনোনয়ন জমা দিতে যান আইএসএফ কর্মীরা। অভিযোগ, বিডিও অফিসের সামনেই ১৪৪ ধারাকে অমান্য করেই তৃণমূল কর্মীরা জমায়েত করে ছিলেন। আইএসএফ কর্মীরা মনোনয়ন জমা দিতে আসতেই তাঁদের লক্ষ্য করে ব্যাপক বোমাবাজি শুরু হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের সামনেই বিডিও অফিসের সামনে চলতে থাকে মুড়িমুড়কির মতো বোমাবাজি। পাশাপাশি চলতে থাকে তৃণমূল বাহিনীর লাঠি, বাঁশ নিয়ে দাপাদাপি। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। এতটাই বোমাবাজি হয়, বিডিও অফিসের সামনে কার্যত কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। এলাকায় ব্যাপক বাহিনী, তবুও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রীতিমতো হিমশিম খায় পুলিশ।
গণ্ডগোল চলাকালীন এক আইএসএফ কর্মীকে ধরে টেনে সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। তিনি ক্যামেরার সামনে হাউ হাউ করে কাঁদতে থাকেন। তাঁর বক্তব্য, তিনি আইএসএফ কর্মী। মনোনয়ন জমা দিতে এসেছিলেন। কিন্তু তাঁর সামনেই বোমা ফেলে তৃণমূল। তাঁর কথায়,” টিএমসি-রা আমায় গুলি করছে স্যর, আমার ক্যান্ডিডেটকে মারছে স্যর। আমি আর কী করব! টিএমসি-রা প্রচণ্ড বম্ব-গুলি চালাচ্ছে। আরাবুল-সওকতের নেতৃত্বেই এই হামলা।”
আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকি বলেন, “আইন লঙ্ঘন হোক, এরকম কোনও কাজ আমরা করব না। কিন্তু যারা অশান্তি করছে, মনোনয়ন জমা দিতে দিচ্ছে না, তার বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। এটাই আশা করছি। তৃণমূল তো বোমা-গুলি-পিস্তল নিয়ে তৈরি, যাতে আমরা এলেই হামলা চালায়।”
তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা অবশ্য নওসাদ সিদ্দিকির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর পাল্টা দাবি, সকাল থেকেই এলাকা অশান্ত করে তুলেছে আইএসএফ। চলছে বোমাবাজি। তৃণমূল কর্মীরা আক্রান্ত। যথেচ্ছভাবে তাদের গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। শওকত বলেন, “আজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা রয়েছে ভাঙড়ে। তাই পরিকল্পনামাফিক অশান্তি করছে আইএসএফ। পুলিশকে লক্ষ্য করেও ওরা বোমা মেরেছে।”