রায়গঞ্জ: প্রার্থী তালিকা পছন্দ না হওয়ায় এবং সদ্য তৃণমূলত্যাগীরা দলের টিকিট পেয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ বিজেপির জেলা সহ সভাপতি বীণা ঝা। গত ১৬ জুন এর প্রতিবাদে রায়গঞ্জে বিজেপির জেলা কার্যালয়ের সামনে অনশনে বসেন তিনি। ওইদিন বিকেলে রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির ২৫ নম্বর আসনে বীণাদেবীকে দলের প্রার্থী করা হবে, এমনই আশ্বাস পাওয়ার পর তিনি অনশন তুলে নেন। কিন্তু নমিনেশন প্রত্যাহারের শেষদিনেও দল তাঁকে সিম্বল না দেওয়ায় নমিনেশন প্রত্যাহার করেননি তিনি। তাই দলের সহ সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিলেন বীণাদেবী। সোমবার উত্তর দিনাজপুরে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকারের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান বীণাদেবী। রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির ২৫ নম্বর আসনে নির্দল হিসেবে লড়াই করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
বীণাদেবীর অভিযোগ, ‘জেলা সভাপতি ও সাংসদ কথা দিয়ে কথা রাখেননি। আমাকে রায়গঞ্জের ১৭ নম্বর জেলা পরিষদ আসনে প্রথমে প্রার্থী করার কথা দিলেও পরে রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির আসনে ২৫ নম্বর আসনে প্রার্থী পদের জন্য নমিনেশন পত্র জমা দিতে বলেন। আমি নমিনেশন পত্র জমা করি। কিন্তু আমাকে দলের সিম্বল না দিয়ে কংগ্রেস থেকে আসা দলের এক কর্মীর স্ত্রীকে টিকিট দেওয়া হল। দলের জেলা নেতৃত্ব তাঁর সঙ্গে গোপণ আঁতাত করে তাঁকে টিকিট দিয়েছে। তাই আমি লড়াইয়ের ময়দান থেকে সরছি না। আমি নমিনেশন প্রত্যাহার করিনি। কিন্তু অপেক্ষা করছিলাম জেলা সভাপতি আমাকে নিয়ে কিছু ভাবেন কিনা।’ তিনি বলেন, ‘আমি দলের জেলা সভাপতির কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছি। কিন্তু বিজেপির সাধারণ কর্মী হিসেবে কাজ করব। যতদিন না পর্যন্ত জেলা সভাপতিকে সরানো হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত এই জেলায় বিজেপির রেজাল্ট ভালো হবে না। কারণ একনায়কতান্ত্রিকভাবে দল চালাচ্ছেন। কারোর কথা ভাবেন না।’
যদিও বিজেপির জেলা নেতৃত্ব বীণাদেবীকে গুরুত্ব দিতে চাননি। তাঁদের কথায়, দলের নির্দেশ না মানলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। বিজেপির একাংশের অভিযোগ, বীণাদেবী প্রকৃত সিপিএমের কর্মী। তাই তাদের সুবিধা পাইয়ে দিতেই প্রার্থীপদ না করে লড়াইয়ের ময়দানে থেকে গেলেন। যদিও সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নীলকমল সাহা বলেন, ‘বীণাদেবী কয়েক বছর আগে আমাদের কর্মী ছিলেন। এখন আর দলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ নেই।’ অবশ্য বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকারের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তাঁকে দু’বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।