উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলা থেকে এই প্রথম বিজেপির হয়ে রাজ্যসভায় যাচ্ছেন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান অনন্ত মহারাজ। বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দিতে বিধানসভায় আসেন অনন্ত। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘আজই মনোনয়ন জমা দিয়েছি। রাজ্যসভার প্রার্থী হয়ে খুব ভালো লাগছে। আমার পক্ষে এটা গৌরবের বিষয়। অনেক বড় দায়িত্ব, সেটা পালন করতে হবে। যে কাজ আমার জন্য গ্রহণযোগ্য এবং যে দায়িত্ব দেওয়া হবে আমি তা করব।’ পাশাপাশি তিনি জানান, রাজবংশীদের প্রতিনিধি হিসেবে তাঁদের জন্য কাজ করবেন তিনি। সে কারণেই তাঁকে পাঠানো হচ্ছে।
রাজ্যসভায় গ্রেটার কোচবিহারের দাবি তোলার প্রসঙ্গে অনন্ত মহারাজ বলেন, ‘আগে রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হই, তারপর এই বিষয়টি দেখা যাবে। তখন এই বিষয় নিয়ে মুখ খুলব।’ রাজ্যসভায় অনন্তকে প্রার্থী ঘোষণা করার পর ‘বাংলা ভাগের চক্রান্ত’ বলে আক্রমণ করে তৃণমূল। সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বঙ্গভাগ হবে না এক থাকবে, সেটা দেশের সংবিধান বলবে। এখন এর বেশি আর কিছু বলব না। সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর বাকিটা বলব। উত্তরবঙ্গ বঞ্চনার শিকার কি না, সেটাও সময় এলে বলব।’
প্রসঙ্গত, আগামী মাসে পশ্চিমবঙ্গের ৬টি রাজ্যসভার আসন খালি হচ্ছে। একটি আসনে পুনর্নিবাচন হবে। ৭টি আসনের মধ্যে ৬টি আসনে তৃণমূলের জয় নিশ্চিত। বড় অঘটন না ঘটলে সপ্তম আসনে জিততে চলেছেন বিজেপির অনন্ত মহারাজ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অনন্তকে প্রার্থী করার পিছনে বিজেপির বিশেষ স্ট্র্যাটেজি রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই একটা জল্পনা চলছিল বিজেপির একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে রাজ্যসভায় যাচ্ছেন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান। সূত্রের খবর, দিল্লি থেকে অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভার প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেয় বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেন অনন্ত মহারাজ। মঙ্গলবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটগণনা চলাকালীনই অনন্ত মহারাজের সঙ্গে দেখা করেন কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। সেখানেই অনন্ত মহারাজ নিশীথকে সম্মতি দেন রাজ্যসভায় যাওয়ার বিষয়ে।
পৃথক কোচবিহার রাজ্যের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে সরব রাজবংশী সমাজের নেতা অনন্ত মহারাজ। বিভিন্ন সময়ে অনন্ত মহারাজের সমর্থন পাওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে একাধিকবার দরবার করেছেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা। মমতা খোদ বিভিন্ন সময়ে উপহার পাঠিয়েছেন মহারাজকে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অনন্ত মহারাজের বাড়িতে সমর্থন চাইতে গিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।