সোনাপুর: পঞ্চায়েত ভোটের গণনায় কারচুপির অভিযোগে বুধবার হাইকোর্টের জলপাইগুড়ির সার্কিট বেঞ্চে মামলা দায়ের করল আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের পাতলাখাওয়া অঞ্চলের দুই প্রার্থী। এই দুজনের মধ্যে একজন বিজেপি এবং আরেকজন সিপিএমের প্রার্থী ছিলেন এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে। কয়েকদিনের মধ্যেই ওই মামলার শুনানি হবে বলে জানা গিয়েছে। এই অঞ্চল থেকে মামলা যে হবে সেটা আগেই আন্দাজ করা গিয়েছিল সেটাই এদিন বাস্তবে হল।
পাতলাখাওয়া অঞ্চলের ১৩ আসনের মধ্যে বিজেপি ৭, তৃণমূল ৫ এবং সিপিএম একটি আসনে জয়লাভ করেছিল। বোর্ড যে বিজেপি গঠন করবে সেটা নিশ্চিত। তবে আরও এক আসনে তাদের জয় ছিল বলে বক্তব্য বিজেপির। গত ১১ জুলাই ভোট গণনার দিনই ওই দাবি করে গেরুয়া শিবির। পাতলাখাওয়া অঞ্চলের ১২/৩৯ বুথে ভোটে জেতার পরও তাদের প্রার্থীকে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়নি বলে মামলা দায়ের করা হয়েছে বুধবার। এবিষয়ে ওই আসনের বিজেপির প্রার্থী ভিম বাহাদুর মাঙ্গার বলেন, ‘দুবার গণনার পর আমিই জিতেছিলাম। তবে আমাকে সার্টিফিকেট না দিয়ে তৃণমূলের প্রার্থীকে জিতিয়ে দেওয়া হয়। আরেকবার গণনা করতে বললেও করা হয়নি। অভিযোগ করলেও সেটার সমাধান করা হয় না। ইমেল করে বিষয়টি জেলাশাসককেও জানিয়েছিলাম।’
ভোটের ফলে দেখা যাচ্ছে ওই প্রার্থী ৪৫৪ ভোট পেয়েছে। আর তৃণমূলের প্রার্থী সন্দীপ কার্যী ৪৬১ ভোট পেয়েছে। ভোট গণনার দিনই সার্টিফিকেটের দাবিতে প্রায় ৮ ঘণ্টা গণনাকেন্দ্রে ধর্না দিয়েছিল বিজেপির ওই প্রার্থী। অন্যদিকে ওই অঞ্চলের ১২/৩৫ বুথে কারচুপির অভিযোগে এদিন মামলা করেছে ওই বুথের সিপিএম প্রার্থী আছিরুদ্দিন মিয়াঁ। ওই বুথে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের প্রার্থী সপিউল মিয়াঁ। ভোট গণনায় কারচুপি করে তাঁকে হারানো হয়েছে বলে বক্তব্য আছিরুদ্দিনের। ওর কথায়, ‘৯৩টি ব্যালটে প্রিসাইডিং অফিসারের সই ছিল না। তবুও সেগুলো গণনায় ধরা হয়। আমাদের আপত্তি শোনা হয়নি। সেই কারণেই মামলা করেছি।’
আদালতে মামলা হওয়ার পর এই দুই আসন তাদের দখলে আসতে পারে বলে মনে করছে বিজেপি, সিপিএম। তাঁদের বক্তব্য, সঠিক গণনা হলে তারাই জিতবে। পাতলাখাওয়ার বিজেপি নেতা রূপন দাসের কথায়, ‘ওই অঞ্চলে আমরা ভালো ফল করেছি। মানুষ আমাদের পক্ষে ভোট দিয়েছে সেটা ফল দেখলেই বোঝা যায়। তবুও তৃণমূল প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে কিছু আসনে কারচুপি করে জিতেছে।’ যদিও তৃণমূল বলছে, গণনা কেন্দ্রে যা হয়েছে পুরোটাই প্রশাসনিক বিষয় এবং তাদেরও প্রার্থী হেরেছে সেই নিয়ে তাদের কোনও বক্তব্য নেই। এবিষয়ে পাতলাখাওয়া অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি নিখিল দে’র বক্তব্য, ‘মানুষ যা রায় দিয়েছে সেটা আমরা মেনে নিয়েছি। আমাদের অনেক প্রার্থী অনেক কম ভোটে হেরেছে। এক জায়গায় প্রথম গণনায় জিতলেও দ্বিতীয় গণনায় হেরেছি। তবে সব কিছুই মেনে নিয়েছি। বিজেপির কেন এই অভিযোগ সেটা তারাই ভালো বলতে পারবে।’