বক্সিরহাট: লোকসভা ভোটের আগে দলের বুথ সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিজেপির কোন্দল চরমে উঠল তুফানগঞ্জ-২ এর শালবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে। বুধবার দলের মণ্ডল সভাপতির বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে তুফানগঞ্জ-বোচামারি সংযোগকারী রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান দলের বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকরা। দলীয় পতাকার অপব্যবহারের অভিযোগে অবরোধকারীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন দলের মণ্ডল সভাপতি ঘনিষ্ঠদের একাংশ। নিমিষেই তা পৌঁছে যায় হাতাহাতিতে। ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে শালবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে বিজেপি। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের আগে এলাকায় বিজেপির দলীয় কোন্দল প্রকাশ্যে চলে আসায় স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে পড়েছে পদ্ম শিবির।
বিজেপি সূত্রে খবর, গত সোমবার শালবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বুথ সভাপতি পদের রদবদল করা হয়। পুরোনোদের বদলে নতুন করে নয়জন বুথ সভাপতির নাম ঘোষণা করেন বিজেপির তুফানগঞ্জ-২ মণ্ডল সভাপতি রঞ্জন রাভা। দলের বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, বুথ সভাপতি সহ দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা না করেই দলের মণ্ডল সভাপতি ও তুফানগঞ্জের বিধায়ক মালতি রাভা রায় সিদ্ধান্ত নিয়ে বুথ সভাপতি মনোনীত করেছেন। এমনকি মণ্ডল সভাপতি মোটা টাকার বিনিময়ে পুরোনোদের বাদ দিয়ে নিজের কাছের লোককে এই পদ দিয়েছেন বলেও অভিযোগ। পুরোনো কমিটি বহাল রাখা ও মণ্ডল সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে তুফানগঞ্জ-বোচামারি সংযোগকারী রাজ্য সড়ক অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। শেষপর্যন্ত জেলা নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। এদিকে অবরোধ শেষে দলীয় পতাকা মাটিতে ফেলে রাখা হয় বলে জানা গিয়েছে। তাই দলীয় পতাকার অপব্যবহারের অভিযোগে দলের বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন দলের মণ্ডল সভাপতি ঘনিষ্ঠদের একাংশ। নিমিষেই তা পৌঁছে যায় হাতাহাতিতে। পরে দু-পক্ষকে হটিয়ে দেন দলীয় কর্মীরাই।
দলের প্রাক্তন বুথ সভাপতি রতন কোঙার জানান, বুথ সভাপতি নির্বাচনে স্বজনপোষণ করেছেন দলের মণ্ডল সভাপতি। দলের মণ্ডল সভাপতির বিরুদ্ধে জেলা সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ জানাবেন তাঁরা। আরেক বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মী নৃপেণ ডাকুয়ার বক্তব্য, কঠিন সময়ে দলের বুথ সভাপতিদের নেতৃত্বে শালবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জয়লাভ করেছে বিজেপি। অথচ মণ্ডল সভাপতি ও বিধায়ক মালতী রাভা রায়ের নেতৃত্বে শালবাড়ি-১ অঞ্চলে নয়জন বুথ সভাপতিদের ছেটে ফেলা হয়েছে। স্বজনপোষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তুফানগঞ্জ-২ এর মণ্ডল সভাপতি রঞ্জন রাভা। তিনি বলেন, ‘দলীয় কমিটিতে আলোচনা করেই নয়জন বুথ সভাপতি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিজেপিতে টাকা দিয়ে কোনও পদ দেওয়া হয় না।’ বিধায়ক মালতী রাভা রায়ের বক্তব্য, ‘দল পরিচালনা করা আমার কাজ নয়। দলের সংগঠন পরিচালনার জন্য মণ্ডল সভাপতি রয়েছে, অঞ্চল প্রমুখ রয়েছে।’ এবিষয়ে বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। দু’পক্ষকে আলোচনায় ডেকে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়া হবে।’ এদিকে বিজেপির এই দলীয় কোন্দল নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল।