প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান: বিজেপির গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে রণক্ষেত্রে পরিণত হল পূর্ব বর্ধমানের কালনা। বাঁশ ও লাঠি দিয়ে এক গোষ্ঠীর বিজেপি নেতা-কর্মী পিটিয়ে রক্তাক্ত করলেন অপর গোষ্ঠীর বিজেপি নেতা-কর্মীকে। তারই মধ্যে আবার বিজেপির জেলা সভাপতির কুশপুতুল পোড়ানোর চেষ্টাও চলে। আর এসবের জেরে সোমবার বিকেলে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় পূর্ব বর্ধমানের কালনার নিভুজি মোড় এলাকা। ঘটনায় বিজেপির দুই গোষ্ঠীরই বেশ কয়েকজন জখম হয়েছেন বলে খবর। চিকিৎসার জন্য তাঁদের কালনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এভাবে প্রকাশ্যে আসায় উৎফুল্ল তৃণমূল শিবির।
রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প চালুর দাবি সহ রাজ্য সরকারের নানা দুর্নীতির প্রতিবাদে এদিন বিকেলে কালনার নিভুজি মোড় থেকে পদযাত্রার ডাক দেয় বিজেপি নেতৃত্ব। একই দিনে একই জায়গা থেকে আর একদল বিজেপি নেতা-কর্মী বিজেপির জেলা সভাপতি পদ থেকে গোপাল চট্টোপাধ্যায়কে অপসারণের দাবি তুলে তাঁর কুশপুতুল পোড়ানোর জন্য জড়ো হন। তখনই বিজেপির দুই গোষ্ঠীর মধ্যে প্রথমে বাকযুদ্ধ শুরু হয়। পরে দুই গোষ্ঠীর নেতা ও কর্মীরা ব্যাপক মারপিটে জড়িয়ে পড়েন। মারপিট দেখে পথ চলতি মানুষজন ভয়ে এদিক ওদিক ছোটাছুটি শুরু করে দেন। থমকে যায় যান চলাচল। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
কী কারণে এই মারপিট, তা জানতে চাওয়া হলে বিজেপির এক গোষ্ঠী দাবি করে, ’টাকা খেয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায় দলের পুরোনো কর্মীদের বিজেপির কার্যক্রম থেকে দূরে রাখছেন। একই সঙ্গে সভাপতি ও তাঁর লোকজন তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বিজেপিকে শেষ করার ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন। এনিয়ে আদি বিজেপি নেতা-কর্মীরা প্রতিবাদ জানানোর জন্য পথে নামতেই গোপালের দলবল তাঁদের আক্রমণ করে।’ আক্রান্ত দীপক বিশ্বাস বলেন, ’সত্যি কথা বলতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছি।’
যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ’উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আমার নামে মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। যাঁরা জেলা সভাপতির কুশপুতুল পোড়ানোর জন্য পথে নামে তাঁরা কখনই বিজেপির কেউ হতে পারে না।’ এনিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের এসটি সেলের রাজ্য সভাপতি দেবু টুডু। তিনি বলেন, ’এটাই বিজেপির আসল রূপ। কালনার বাসিন্দারা এদিন নিজের চোখে তা দেখলেন। এজন্যই তো আমি বলি বিজেপি অসভ্য বর্বরদের দল।’