তমালিকা দে, শিলিগুড়ি: মানবতাই সব থেকে বড় ধর্ম। দেবী দুর্গার কাছে জাতিধর্মবর্ণের কোনও ভেদাভেদ নেই। তিনি হলেন জগজ্জননী। সমাজের কাছে এই বার্তা দিয়ে পরিচালক মানব ঘোষ তৈরি করছেন স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি ‘কালো দুগ্গা’ (Black god)। সেখানেই কালো দুগ্গা চরিত্রে অভিনয় করেছে ডাবগ্রামের বাসিন্দা আরাধ্যা ঘোষ (Aradhya ghosh)। তার কাজ প্রশংসিত হয়েছে নানা মহলে।
একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও জাতিধর্মবর্ণ এখনও যেন আমাদের পিছু ছাড়েনি। যার ফলে সভ্য সমাজে এখনও এগুলোর কবলে পড়ে হেনস্তা হতে হয় অনেককেই। এমনকি দেবতাদের পুজোর ক্ষেত্রেও এই ভেদাভেদ দেখা যায়। তবে দেবতারদের কাছে যে সবাই সমান সে বার্তা দিতেই এই ছবি তৈরি করেছেন পরিচালক।
সেখানেই মূল চরিত্রে অভিনয় করেছে রবীন্দ্রনগর গার্লস হাইস্কুলের (Rabindranagar girls high school) সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী আরাধ্যা। শর্ট ফিল্মে তাঁর এই চরিত্র নিয়ে আরাধ্যা বলে, ‘এই ছবিটিতে আমি মুচির মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি।’ তার ইচ্ছে সে দুর্গাপুজোর কুমারীপুজোতে বসবে। কিন্তু মুচির মেয়ে এবং গায়ের রং কালো বলে তাকে পুজোতে বসতে দেওয়া হয়নি।
কিন্তু দেবতার কাছে যে সবাই সমান সমাজকে তা বুঝিয়ে অবশেষে সে পুজোয় বসে। ছাত্রীর অভিনয়ে খুশি হয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা দূর্বা ব্রহ্ম বলেন, ‘স্কুলের ছাত্রীরা পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন সৃজনশীল কাজও করছে। পড়ুয়াদের জন্য স্কুলে নাটকের উদ্যোগও নেওয়া হয়। সেখানেও আগ্রহের সঙ্গে অনেক ছাত্রী অংশগ্রহণ করে। আরাধ্যার অভিনয় খুব সুন্দর হয়েছে। ওর আরও সাফল্য কামনা করি।’
শিলিগুড়ি ও আশেপাশের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে এই শর্ট ফিল্মের (Short film) শুটিং হয়েছে। এই ছবির পরিচালক তথা আরাধ্যার বাবা মানববাবু বলেন, ‘আমি আগেও বেশ কয়েকটি শর্ট ফিল্ম করেছি। সেগুলো দর্শকেরা পছন্দ করেছেন। আশা করছি এই ছবিও দর্শকদের ভালো লাগবে। এই ছবির মাধ্যমে সমাজকে গুরুত্বপূর্ণ একটি বার্তা দেওয়া হয়েছে।’ দর্শকেরা ইউটিউবে এই শর্ট ফিল্মটি দেখতে পারবেন। আরাধ্যার প্রথম ছবির জন্য খুশি তাঁর স্কুলের শিক্ষিকা ও ছাত্রীরা। ওর স্কুলের শিক্ষিকারা বলছেন, ভাবতেই পারছি না কালো দুগ্গার চরিত্রটি আরাধ্যা এমনভাবে ফুটিয়ে তুলবে।