রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: কালো তালিকাভুক্ত (Blacklisted company) এজেন্সিকে কাজের বরাত দিয়ে মাটিগাড়া-১ (Matigara) গ্রাম পঞ্চায়েত বিপাকে পড়েছে। অভিযোগ, ভুয়ো নথি দিয়ে পঞ্চায়েত সমিতির কাজের বরাত নিতে গিয়ে মাটিগাড়ার সুশ্রুতনগরের একটি সংস্থা গত বছর ধরা পড়ে গিয়েছিল। সেই সময় বিডিও (BDO) ওই সংস্থাকে দু’বছরের জন্য কালো তালিকাভুক্ত করেন। সেই সিদ্ধান্তের কথা প্রশাসনের সর্বস্তরে লিখিতভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সংস্থাই আবার মাটিগাড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি কাজে টেন্ডারে অংশ নেয়। তাৎপর্যপূর্ণভাবে ওই সংস্থাকেই কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি কাজ শুরুও করেছে।
এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন মহলে হইচই হয়। খোদ গ্রাম পঞ্চায়েত উপপ্রধান বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বিডিওর কাছে আবেদন করেন। বিডিও অভিযোগ পেয়েই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকে চিঠি দিয়ে ওই সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করার বিষয়টি আরও একবার জানিয়ে দেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য বলেন। কিন্তু এখনও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কৃষ্ণ সরকার বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে কিছু জানি না। বিডিও যা বলার বলতে পারবেন।’ বিডিও বিশ্বজিৎ দাসের বক্তব্য, ‘অভিযুক্ত সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত সবাইকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এখন কেউ জানি না বললে হবে না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।’
গত বছরের এপ্রিল মাসে মাটিগাড়া পঞ্চায়েত সমিতির তরফে দুটি সৌরবিদ্যুৎচালিত পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পের টেন্ডার ডাকা হয়। সেই টেন্ডারে মাটিগাড়ার সুশ্রুতনগরের একটি এজেন্সি অংশ নেয়। সেই টেন্ডার প্রক্রিয়া চলাকালীনই প্রশাসন জানতে পারে যে, ওই এজেন্সি যে সমস্ত নথিপত্র জমা দিয়েছে সেখানে রাজগঞ্জ ব্লকের বিন্নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্রেডেনশিয়াল সার্টিফিকেট জমা দিয়েছে। ওই সার্টিফিকেটটি ভুয়ো। সরকারিভাবে খোঁজখবর করে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ পাওয়ার পরে ওই সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। ১১ মে ২০২৩-এ ওই সংস্থাকে মাটিগাড়ার বিডিও চিঠি দিয়ে দু’বছরের জন্য কালো তালিকাভুক্ত করার কথা জানিয়ে দেন। সেই চিঠির প্রতিলিপি সব গ্রাম পঞ্চায়েত, মহকুমা পরিষদ, জেলা প্রশাসন থেকে রাজ্য স্তর পর্যন্ত জানানো হয়।
সম্প্রতি মাটিগাড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে রুফটপ সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট বসানোর জন্য টেন্ডার ডাকা হয়। সেই টেন্ডারে কালো তালিকাভুক্ত এই এজেন্সি পুনরায় অংশ নেয়। টেকনিকাল বিড খোলার পরেই বিষয়টি জানাজানি হয়। সেই সময় খবর পেয়ে বিডিও পঞ্চায়েত প্রধানকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বলেন। তার পরেও ওই সংস্থাকেই কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে সংস্থাটি কাজ শুরুও করে দিয়েছে।